গুচ্ছের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এখনো একাডেমিক কাউন্সিল হয়নি জবির

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে আবারও নিজস্ব ভর্তি পদ্ধতিতে ফিরতে একাধিকবার কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস)। সর্বশেষ উপাচার্য বরাবর আগামী ১২ মার্চের মধ্যে বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল করে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। কিন্ত স্মারকলিপি প্রদানের পর ৭দিন কেটে গেলেও বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের বিষয়ে কোন সাড়া নেই প্রশাসনের। 

বারবার দাবির পরও বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে  কোনরকম সাড়া না পেয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছে থাকবে নাকি নিজস্ব ভর্তি পদ্ধতিতে ফিরবে এটির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কবে নাগাদ হবে সেটিও এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পদ্ধতি নির্ধারণে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল আহ্বান করার কথা থাকলেও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে গুচ্ছভুক্ত উপাচার্যদের মিটিংয়ের জন্য সেদিনের সভা আয়োজন সম্ভব হয়নি। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আয়োজিত সভায় মার্চের শেষের দিকে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগ্রহ জানান উপাচার্যরা। এ সভায় গুচ্ছে থাকার বিষয়ে আপত্তি জানায় জবি ও ইবি শিক্ষক সমিতি।

পরবর্তীতে গত ২ মার্চ শিক্ষক সমিতির একটি জরুরি মিটিংয়ে সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ থেকে বের হবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই মিটিং শেষে ভর্তি পদ্ধতি নির্ধারণে বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিলের জন্য জবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষকরা। সেখানে শিক্ষকরা আগামী ১২ মার্চের মধ্যেই এই সভা আয়োজনের দাবি জানান।

তবে এরপর প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গেলেও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। অপরদিকে গুঞ্জন উঠেছে এবারও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতোই গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকবে৷ 

সমন্বয়হীনতা, ভর্তি কার্যক্রমে অধিক সময়ক্ষেপণ, মানসম্মত শিক্ষার্থী না পাওয়া সহ বেশ কিছু কারণে গুচ্ছ পদ্ধতি তার মৌলিক উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। একইসাথে  বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মিলিত (ঘ) ইউনিট না থাকাও আসন সহসায় পরিপূর্ণ না হবার অন্যতম কারণ মনে করছেন তারা। আর এসব কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তার জৌলুস হারিয়েছে বলেও দাবি তাদের।

আরও পড়ুন: গুচ্ছের বি ইউনিটের প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি, অতি অল্পসময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় যতটা এগিয়ে গিয়েছিল, দুইবার গুচ্ছে যাওয়ায় অনেকটা আবার পিছিয়ে গেছে। গুচ্ছ পদ্ধতির অসংগতির ফলেই দুইবার শিক্ষার্থী সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বারবার গণ সাক্ষাৎকার দেওয়ায় এখানে মেধার কোন মূল্যায়ন হয়নি। যারা নাম্বার পেয়েছে তারাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরেছে। এভাবে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ক্ষেত্রে মেধার প্রতিযোগিতা হয়না। তাই নিজস্ব পদ্ধতিতে ফেরা দরকার। 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বয়হীনতা,মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থী না পাওয়া,ভর্তি কার্যক্রমে অনেক সময়ক্ষেপণ সহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা গিয়েছে। এর সার্বিক প্রভাব পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরাও বিড়ম্বনায় পড়েছে। 

তিনি বলেন, আমরা গত ২৭ ফেব্রুয়ারির মিটিংয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে এবং একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব ভর্তি পদ্ধতির বিষয়ে বলেছি। কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল আয়োজনের জন্য স্মারকলিপি দিয়েছি। এখনো কোন সাড়া পাইনি। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে (১২ মার্চ) বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল সভা আয়োজন না করা হয় তাহলে আমরা মিটিং করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিব। 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ.কে.এম লুৎফর রহমান বলেন, আমরা সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় থাকব না। এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। আইন অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে। গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে যে মানের দরকার ছিল সেটা নেই। এর ফলে উল্টো শিক্ষার্থীরাই এক প্রকার হয়রানির স্বীকার হচ্ছে,সেশন জটও বাড়ছে। 

এ বিষয়ে জানতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হককে ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence