বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ গবেষণা: খুবি ভিসি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৩, ০৬:১১ PM , আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩, ০৬:১১ PM
শিক্ষাদানের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হচ্ছে গবেষণা ও উদ্ভাবনী বিষয় নিয়ে কাজ করা জানিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেছেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী ডিসিপ্লিন শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এখানকার গ্রাজুয়েটরা দেশ-বিদেশে সুনাম ও দক্ষতার সাথে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করেছে।
শুক্রবার (৩ মার্চ) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের রজতজয়ন্তী ও পুনর্মিলনী উদযাপন উপলক্ষে ফার্মেসী ডিসিপ্লিন এবং ডিসিপ্লিনের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত পরিবর্তন, মানোন্নয়ন এবং গবেষণায় জোর দেওয়ার যে তাগিদ দিচ্ছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় তা অনুধাবন করে ইতোমধ্যে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেছে। শিক্ষাদানের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হচ্ছে গবেষণা ও উদ্ভাবনী বিষয় নিয়ে কাজ করা। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সে দিকটিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধির পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকেও গবেষণায় উৎসাহ যোগাতে স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম ওবিই কারিকুলাম প্রণয়ন কাজ সম্পন্ন করে তা এ বছরের জানুয়ারি থেকে অনুসরণ শুরু করেছি। একচল্লিশ সালের উন্নত বাংলাদেশ গঠনে প্রয়োজন দক্ষ দেশপ্রেমিক জনশক্তি। আমরা সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করছি। ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবারেশন বাড়াচ্ছি।
অনুষ্ঠানে বিকন মেডিকেয়ারের চেয়ারম্যান এবং বিকন ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংসদ সদস্য মোহাম্মাদ এবাদুল করিম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ফার্মেসী শিক্ষার প্রসারের ফলে এখন বছরে কয়েকশত গ্রাজুয়েট বের হচ্ছে। এর মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী গ্রাজুয়েটরা দেশের ওষুধ শিল্পসহ নানা পেশায় দক্ষতার সাথে কাজ করছে। তিনি বলেন, এখন আমরা ওষুধ শিল্পে ভালো করছি। কিন্তু এ অবস্থায় বসে থাকলে চলবে না। আমাদেরকে ফার্মেসী শিক্ষা ও গবেষণার ব্যাপ্তি ঘটাতে হবে। নতুন নতুন দিকে গবেষণা করতে হবে। একচল্লিশ সালে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের অভিলক্ষ্য অর্জনে ফার্মেসী র গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এখন ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া কোলাবরেশন বাড়াতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে এগোতে হবে।
মোহাম্মাদ এবাদুল করিম বলেন, ফার্মাসিস্টদের রোগী সেবা, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। ফার্মাসিস্টদের এখন প্রাকটিস করার সুযোগ করে দিতে হবে। তাহলে তারাও রোগীদের পাশে থাকতে পারবে। রোগীরা উপকৃত হবে, চিকিৎসায় গুণগত পরিবর্তন আসবে। ফার্মেসী শিক্ষার পরিসর বাড়িয়ে স্কুল অব ফার্মাসিটিউক্যাল সায়েন্সেস করে এর সাথে আরও বিষয় যুক্ত করতে হবে যাতে করে একুশ শতকের উপযোগী এবং চাহিদা পূরণের মতো জনশক্তি তৈরি হয়। আমাদের ফার্মেসী শিক্ষা, গবেষণা, উদ্ভাবনা বিশ্বে আরও অবদান রাখতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের সহ-সভাপতি এম মোসাদ্দেক হোসেন, বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিলের প্রাক্তন সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট লেখক ড. সুভাষ সিংহ রায় এবং রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. সাইফুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে রজতজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য-সচিব প্রফেসর ড. মো. ইকবাল আহমেদ স্বাগত বক্তব্য এবং ডিসিপ্লিনের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মোকাদ্দেজ সরদার শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। এদিন প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ফার্মেসী ডিসিপ্লিন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মাহবুবুল আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মেহেদী হাসান এবং সহকারী অধ্যাপক সুষ্মিতা পাল।
অনুষ্ঠানে দেশে ওষুধ শিল্পে সবিশেষ অবদান রাখার জন্য ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের পক্ষ থেকে বিকন মেডিকেয়ারের চেয়ারম্যান এবং বিকন ফার্মাসিউটিক্যালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সংসদ সদস্য মোহাম্মাদ এবাদুল করিমকে বিশেষ সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এছাড়া ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান এবং প্রাক্তন ডিসিপ্লিন প্রধানদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
এদিন ফার্মেসী ডিসিপ্লিনের সাথে শিক্ষা ও গবেষণায় উক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন টেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী এবং বিকন ফার্মার মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মোঃ আনিসুর রহমান। এরপর তা উপাচার্য ও বিকন চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, অ্যালামনাই ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।