ইবি ক্যাম্পাসে বাড়ছে মশার উপদ্রব, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ে ময়লার স্তুপ
বিশ্ববিদ্যালয়ে ময়লার স্তুপ  © টিডিসি ফটো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) যথাযথ তদারকি ও নিয়মিত পরিষ্কারের অভাবে যেখানে সেখানে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এতে ক্যাম্পাসে বাড়ছে মশার উপদ্রব, বিনষ্ট হচ্ছে ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, একাডেমিক ভবনগুলোর পেছনে, ঝাল চত্ত্বর, জিয়া মোড় এলাকা, টিএসসি’সহ আবাসিক হল সমূহের পেছনের অংশে ময়লার স্তুপ হয়ে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ ভবনের সামনে দীর্ঘদিন ধরে উচ্ছিষ্ট খাবারের প্যাকেট, অব্যবহার্য প্লাস্টিক পরে আছে। পাশেই ডাস্টবিন থাকলেও যথাযথ পরিষ্কারকের অভাবে সেখানে ময়লা পচে তরুলতা জন্ম নিয়েছে। একই চিত্র টিএসসি ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পেছনের অংশে। সেখানে ডাস্টবিন উপচে ময়লা জমে আছে।

এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগের সামনে ডাস্টবিন না থাকার কারণে বিভিন্ন সময় আয়োজন করা অনুষ্ঠানের অবশিষ্টাংশ, অফিসের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ভবনের পেছনে ফেলে রাখে বিভাগগুলো।

আরও পড়ুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনভর ছাত্রলীগের শোডাউন

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, অনিয়ন্ত্রিত ভাবে যেখানে-সেখানে  ময়লার স্তূপ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশটা অস্বস্তিকর লাগে। প্রায়সময়ই  এসব জায়গা দিয়ে চলাচলে নাকে উৎকট গন্ধ ভেসে আসে। এতে বমি চলে আসে। একারণে আমাদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তি হচ্ছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংকটের কারণে তারা ভবনের সামনের জায়গাসমূহ পরিষ্কার করলেও পেছনের গুলো পরিষ্কারের আগ্রহ বোধ করে না বলে অভিযোগ রয়েছে। ক্যাম্পাসে ময়লার ভাগাড় না থাকার কারণে নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা না পুড়িয়ে যত্রতত্র চলছে ময়লা পোড়ানোর কাজ। এই বিষাক্ত ধোঁয়া বিরাজ করে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে। এতে শিক্ষার্থীরা আছেন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে।

বিজ্ঞান ভবনের কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, ২০১১ সাল থেকে কাজ করছি এখানে, ডাস্টবিনও পরিষ্কার করতে দেখিনি। আমাকে যেভাবে নির্দেশে দেওয়া হয়েছে, সেভাবে কাজ করি। আমি ডাস্টবিনে ময়লা ফেলি। 

আশে-পাশে ময়লা পড়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে যেমন পারে ইচ্ছা মতো যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে।

আরও পড়ুন: কমলাপুর স্টেডিয়াম বা বাঙলা কলেজ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশ

এদিকে ২য় বর্ষের সাকিব বলেন, ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদ পার্শ্ববর্তী লাইব্রেরীর পেছনের রাস্তা দিয়ে কেউ যদি লাইব্রেরিতে যায় তখন সেখানে থাকা স্তূপকৃত ময়লার ভাগাড় থেকে একটা খারাপ গন্ধ নাকে আসে। এছাড়াও জিয়া মোড় এলাকার ডাস্টবিন দেওয়া থাকলেও ময়লাগুলো উপচে পড়ছে কিন্তু এটা পরিষ্কার করার লোক নেই। এছাড়াও বিভিন্ন ভবনের ওয়াশরুম গুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস্টেট শাখার প্রধান শামছুরজাম্মান জোহা বলেন, আমরা বারবার ময়লাগুলো নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে বলছি কিন্তু কেউ শুনছে না।

আমি দায়িত্ব নেবার পর থেকে ময়লার বিষয়টি নিয়ে সরজমিনে তদারকিও করছি এবং আমার কর্মীরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। ক্যাম্পাসে ময়লার স্তূপ জমে আছে এ বিষয়ে আমি একমত নই। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের ময়লা ফেলার ২৯ টি স্পট চিহ্নিত করণ থাকলেও সেই অনুপাতে লোক নেই তা পরিষ্কার করার। আর আমাদের স্থাপিত ডাস্টবিনগুলো পরিষ্কারের জন্য ১টি মাত্র ভ্যান বাই রোটেশনে কাজ করে।


সর্বশেষ সংবাদ