নবীন শিক্ষার্থীকে হলে তোলা নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি

হাতাহাতি
হাতাহাতি   © টিডিসি ফটো

হলের নবীন এক শিক্ষার্থীকে নিজেদের গ্রুপে উঠানো নিয়ে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে এই ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়।

হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শহিদুল হক শিশির ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেনের গ্রুপের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত শতাধিক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারমুখী অবস্থান নিতে দেখা যায়। শিশির কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের অনুসারী। অন্যদিকে, হোসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী। 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থী ওই হলে উঠতে আসলে সাধারণ সম্পাদক হোসেনের গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মীরা তার সাথে কথা বলে রাখলেও সভাপতি শহিদুল হক শিশিরের গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মীরা হলে থাকতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার লোভ দেখিয়ে তাদের গ্রুপে উঠায়। একপর্যায়ে প্রথম বর্ষের ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে দুই গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে জোরজবরদস্তি ও হাতাহাতি শুরু হয়। এরপর হাতাহাতি সিনিয়রদের মাঝেও ছড়িয়ে যায়। এর মাঝে সভাপতি শহিদুল হক শিশিরের গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রলীগকর্মী মোহাম্মদ হোসেনের গ্রুপের মাস্টার্স পড়ুয়া এক ছাত্রলীগকর্মীর শার্টের কলার ধরলে সেক্রেটারি গ্রুপের কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয় এবং তখন পরিবেশ আরো উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে যায়।

জানা যায়, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক ভাবে সিট বরাদ্দ দেয়া হলেও ছাত্রলীগই ঠিক করে দেয় কে কোন রুমে উঠবে। এছাড়াও এই হলে প্রথম বর্ষের কাউকে সিট বরাদ্দ দেয়া হয় না। তাই ঢাকায় থাকার জায়গা না থাকায় অনেকে বাধ্য হয়ে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত গণরুমগুলোতে উঠে। যেখানে একরুমে ২৫-৩০ জন করে গাদাগাদি করে অবস্থান করে। আর এসব রুমগুলোর নিয়ন্ত্রণ করে থাকে হল ছাত্রলীগের সভাপতি শহীদুল হক শিশির ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হোসেন।

এদিকে, হাতাহাতির ভিডিও ধারন করতে গেলে মুহাম্মদ হোসেনের গ্রুপের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা আইনুল ইসলাম মাহবুব এক শিক্ষার্থীকে চড়-থাপ্পড় মেরে তার মোবাইল ফোন কেডে নেয়। যদিও পরে তা ফিরিয়ে দেয়‌‌ বলে জানা যায়। 

ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য জানতে হল ছাত্রলীগ সভাপতি শহিদুল হক শিশিরকে ও ঘটনার ভিডিও ধারণ করা শিক্ষার্থীকে মারধরকারী  অভিযুক্ত মাহবুবকে ফোন করেও তাদের কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।

তবে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক হোসেন বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এরকম কোন কিছুই হয়নি। এরকম কিছু হলে তো ব্যবস্থা নিতাম।

আরও পড়ুন: প্রভাষক তাহমিনার আগুনে পুড়ে মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, ‘হত্যাকাণ্ড’

এদিকে, এই বিষয়ে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি মিটিং এ আছেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে আগে এই দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের জুনিয়র শিক্ষার্থী তোলা নিয়ে হল অফিসের সামনেই বাকবিতন্ডায় জড়াতে দেখা যায়। ওই ঘটনার কয়েকদিন পর একই কারণে মুহসীন হলের এক্সটেনশনে দুই পক্ষকে রড-স্ট্যাম্প নিয়ে মুখোমুখি হতে দেখা গিয়েছিল।


সর্বশেষ সংবাদ