বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক হতে চান ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদরা, আবেদন শতাধিক

১০৭টি নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক হতে ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদরা আবেদন করেছেন
১০৭টি নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিক হতে ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদরা আবেদন করেছেন  © ফাইল ছবি

দেশে আরও ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৩০টির পরিদর্শন কাজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনও পাঠানো হয়েছে। নতুন এসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য আবেদনকারীদের প্রায় সবাই ব্যবসায়ী-রাজনীতিবিদ।

ইউজিসি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিনই নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রক্রিয়া জানতে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করেছে এমন সংখ্যাও কম নয়। আবেদনের সঙ্গে অনুমোদনও দেয়া হচ্ছে। সর্বশেষ গত বছরের সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়টি অস্থায়ীভাবে স্থাপন ও পরিচালনার সাময়িক অনুমোদন দেয় মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে, নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কুষ্টিয়া, রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও রাজধানীর মিরপুরে স্থাপনের অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্য, স্থানীয় পর্যায়ের নেতা ও ব্যবসায়ীরা এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা হিসেবে রয়েছেন।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১০৭টি আবেদন জমা হয়ে আছে। যেসব জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয় আছে, সেসব জায়গার জন্যও নতুন করে পড়েছে আবেদন। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পেয়েছেন, এমন উদ্যোক্তাও নতুন করে ভিন্ন জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছেন।

আরও পড়ুন: ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে ইউজিসির সতর্কতা

জানা যায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর অধীনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদনের জন্য উদ্যোক্তাদের আবেদন জমা দিতে হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। আবেদনের ভিত্তিতে ইউজিসি পরিদর্শন রিপোর্ট জমা দিলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

আবেদনের ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইউজিসি সূত্রে নাম জানা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের স্ত্রী ফৌজিয়া আলম কুষ্টিয়ায় ‘লালন বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে, ব্যবসায়ী মোস্তফা আজাদ চৌধুরী রংপুরে ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে, অ্যাডভোকেট আরমান আলী রাজশাহীতে ‘সোনার বাংলা ইউনিভার্সিটি’ নামে, উত্তরা ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াসমিন আরা লেখা বগুড়ায় ‘ইউনিভার্সিটি অব বগুড়া ট্রাস্ট’ নামে, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শামসুল আলম ভুঁইয়া চাঁদপুরে ‘অ্যাপোলো ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামে, আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে ‘ইন্টারন্যাশনাল ওমেন ইউনিভার্সিটি নামে, আবু নোমান হাওলাদার নামে এক ব্যক্তি ঢাকায় ‘ইউনিভার্সিটি অব মডার্ন টেকনোলজি’ নামে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আবেদন করেছেন।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবু ইউসুফ মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ইউজিসি থেকে যে কয়টি পরিদর্শন প্রতিবেদন আমাদের কাছে এসেছে আমরা তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে অনুমোদনের জন্য সম্মতি এলে তাদের অনুমোদন দেওয়া হবে।

ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, দেশে বর্তমানে ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৬২টি। মোট চালু রয়েছে ৯৭টি। অনুমোদন নেওয়ার পরও নানান জটিলতায় কার্যক্রম শুরু হয়নি ১০টির। বাকিগুলো একেবারেই নতুন। এর অনেকগুলোই সারাবছর শিক্ষার্থী সংকটে ভুগছে।

ইউজিসির সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, অল্প কিছু ছাড়া দেশের অনুমোদিত অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখনো তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এভাবে প্রতিনিয়ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাড়লেও ইউজিসিতে জনবল বাড়ানো হয়নি বলে অনেক অনিয়ম ধরা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের চেয়ে যারা অনুমোদন পেয়েছে তাদের সঠিক পথে আনা বেশি জরুরি।

আরও পড়ুন: বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দুই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

তবে চলতি বছর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যাপারে নড়েচড়ে বসতে দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি)। সম্প্রতি দেশের ২৩টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে চতুর্থদফা আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ভাড়া বাড়ি থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তি বন্ধ করে দেওয়া হবে। একইসঙ্গে অস্থায়ী ক্যাম্পাস অবৈধ ঘোষণা করা হবে।

অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছর পার হয়েছে কিন্তু স্থায়ী ক্যাম্পাসে যায়নি, শুধু তাদের শোকজ করা হয়েছে। এরপর শোকজের জবাব সামনে রেখে নতুন আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এখানে অন্য কোনো বিবেচনা প্রাধান্য পায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence