শিক্ষার্থী ভর্তি করালে উৎকোচ দেয় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি

ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি  © ফাইল ফটো

শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে দিলে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা করে উৎকোচ দিচ্ছে বেসরকাারি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি। ছাত্রছাত্রী ভর্তির পর এই অর্থ অডিট কার্যক্রমের মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষ হিসাবে কাজ করা ওই ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বলছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যাগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে ‍দিলে উৎকোচ দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। এ ধরনের বিষয় একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলে। সুর্নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথাও জানিয়েছে ইউজিসি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে যেকোন বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে শিক্ষার্থী প্রতি ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এজন্য যে ব্যক্তি শিক্ষার্থী নিয়ে আসছে তাকে একটি ফরম পূরণ করতে হয়। ফরম পূরণের দুই সপ্তাহের মধ্যে এই অর্থ ওই ব্যক্তিকে দেয়া হয়। অভিনব এ কাজটি করার জন্য টাকা সরাসরি হাতে না দিয়ে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয়। এছাড়া গ্রুপ ভিত্তিক শিক্ষার্থী ভর্তি করালে আরও বড় অঙ্কের কমিশন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এসব অভিযোগের সত্যতা মিলেছে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভর্তি অফিসে কথা বলে। এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর অভিভাবক পরিচয়ে এডমিশন অফিসে ফোন দেওয়া হলে তারা জানায়, এক্সার্টানাল এম্বাসেডর হয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হবে। এই অর্থ চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে। এছাড়া টাকা পেতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। প্রতিটি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এক্সাটার্নাল এম্বাসেডর হতে একবারই ফরম পূরণ করতে হবে। পরবর্তীতে আর ফরম পূরণ করতে হবে না। কেবলমাত্র যে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে তার ফরম পূরণ করতে হবে। এরপর সেটি হিসাব করা হয়।

আরও পড়ুন: ঈদে মায়ের কাছে ফেরা হলো না ড্যাফোডিল শিক্ষার্থী মাসুমের

গ্রুপ ভিত্তিক শিক্ষার্থী ভর্তিতে কমিশন দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সহিদ আখতার হুসাইন। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তিনি বলেন, প্রতিটি শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৫ হাজার টাকা করে উৎকোচ দেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ৫ থেকে ৭ জন শিক্ষার্থী একসাথে ভর্তি করালে কিছু কনভিনেন্স হিসাবে খরচ দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অডিট কার্যক্রমের মাধ্যমে যে অর্থ দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে আপনি কীভাবে বিষয়টি জানেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, আমি পাবলিক ইউনিভার্সিটি থেকে এসেছি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করালে কিছু টাকা পাওয়া যায় সেটি শুনেছি। তবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনটি হয় এটি আমার জানা নেই। আমি অফিসে গিয়ে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাতে পারব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান খারাপ হলে সেখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে চায় না। যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী ভর্তি করালে এমন উৎকোচ দিচ্ছে তাদের শিক্ষার মান নিয়েই আমার প্রশ্ন আছে। ভালো বিশ্ববিদ্যালয় হলে তারা কখনোই শিক্ষার্থী ভর্তি করালে কমিশন দিত না।

আরও পড়ুন: ২২ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে মানা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে এমন কমিশন বাণিজ্য বন্ধে ইউজিসি ব্যবস্থা নেবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আমাদের কাছে সুর্নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ দিয়ে কেউ অভিযোগ দিলে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ধরনের কাজ থেকে তারা বেরিয়ে না এলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence