ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস পালিত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে  © সংগৃহীত

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসিয়া ক্লাবের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল র‌্যালি, আলোচনা সভা, পোস্টার প্রেজেন্টেশন প্রতিযোগিতা, নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ, শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুপ্রেরণা ভবন (একাডেমিক ভবন-১) এর সামনে থেকে র‌্যালি ও কেক কাটার মাধ্যমে দিবস পালনের সূচনা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিকেল ছয়টায় অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘটে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনস্পেক্টা ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ফয়েজ আহমেদ। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য ও জীবন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, সহযোগী ডিন,ফার্মেসি বিভাগের প্রধান ও বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিলভি বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ ফার্মাসিস্টদের জন্য আজকের দিনটি বিশেষ দিন। এতে আমাদের সমাজের স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়নে ফার্মাসিস্টদের দায়বদ্ধতা মনে করিয়ে দেওয়া হয়।’

তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ফার্মেসিয়া ক্লাবের জনসংযোগ সম্পাদক সিহাব বলেন, ‘আজকের অনুষ্ঠানের সফল আয়োজন সম্ভব হয়েছে ফার্মেসি বিভাগ, ফার্মেসিয়া ক্লাব ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায়। বিশেষ করে জুনিয়রদের আগ্রহ ও পরিশ্রম প্রশংসনীয়। আশা করি, আমরা সবাই মিলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে অবদান রাখতে পারব।’

ফার্মেসি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শরিফা সুলতানা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘২৫শে সেপ্টেম্বর বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস। একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে এই দিনে আমরা আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে অনেকটাই ওয়াকিবহাল হই। এবারের স্লোগান ‘Think Pharmacist, Think Health’, অর্থাৎ স্বাস্থ্য খাতে একজন ফার্মাসিস্টের যে ভূমিকা, সেটা আমাদের মনে করিয়ে দেয়। বাংলাদেশে ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর এখন অনেক ফ্লারিশ করেছে। আমরা প্রায় ৯৮ শতাংশ ওষুধ নিজেরাই তৈরি করতে পারি এবং সারা বিশ্বের ১৫০-টিরও বেশি দেশে ওষুধ রপ্তানি করি। এটা কিন্তু আমাদের ফার্মাসিস্টদের দক্ষতার প্রমাণ করে। তবে, হাসপাতাল ফার্মেসির জায়গাটা আমরা অনেকটাই পিছিয়ে আছি। যদিও বর্তমান যারা পৃষ্ঠপোষক আছেন, তারা চেষ্টা করছেন এই জায়গাটা এক্সপ্লোর করার জন্য। বেসরকারি অনেক হাসপাতালেই ফার্মাসিস্টদের সুযোগ তৈরি হয়েছে, সরকারি জায়গায়ও হচ্ছে। এই জায়গাটা আরও গুরুত্ব পেলে আমাদের ফার্মাসিস্ট হিসেবে সমাজে এবং কমিউনিটিতে যে সার্ভিসটা আমাদের দেওয়ার সুযোগ আছে, সেটা আমরা আরও বাড়াতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘ম্যানুফ্যাকচারিং খাত বা ওষুধ উন্নয়নের জায়গাটা, ওইখানে আমাদের ভূমিকা সারা বিশ্বে সমাদৃত। এবং এশিয়ার জায়ান্ট কয়েকটি দেশের মধ্যে কিন্তু আমরাও পড়ি, যেখানে ফার্মাসিউটিক্যাল নিয়ে আমরা অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমাদের এই ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরটা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যেটা আরএমজি-র পরেই অবদান রাখছে। সুতরাং আমার মনে হয় যে, আমাদের ছাত্রছাত্রীদেরকে আমরা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে যেভাবে তৈরি করছি, তারা নিজেদেরকে এমন দক্ষ করে গড়ে তুলবে, যারা শুধু দেশ নয়, বিদেশের ফার্মা ওয়ার্ল্ডেও নিজেদের অবস্থান তৈরি করবে।’

ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আজকে ফার্মাসিস্টরা বাংলাদেশে যে অবস্থানে পৌঁছেছে, তা নিশ্চয়ই গত ৫০ বছরের তুলনায় একটি অর্থবহ জায়গায় পৌঁছেছে। ফার্মাসিস্টদের জ্ঞানভিত্তিক চর্চাকে ভর করে এবং বৈশ্বিক ফার্মাসিস্টদের চাহিদার কারণে ভবিষ্যতে তাদের ভূমিকা আরও অনেক বড় হবে। যেমন, বাংলাদেশ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হয়ে গেলে আর প্যাটেন্ট রাইটের যে সুযোগটা পাচ্ছিল, সেটা আর পাবে না। এটা যেমন একদিকে সীমাবদ্ধতা, অন্যদিকে একটা চ্যালেঞ্জও। আর সেই চ্যালেঞ্জ ও সুযোগের ফলে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো ড্রাগ ডিসকভারি ও নিউ মলিকিউল ডেভেলপমেন্টে এগিয়ে আসবে। যার ফলে ফার্মাসিস্টদের কর্মক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে।’

এ বছর দিবসটির আন্তর্জাতিক প্রতিপাদ্য ছিল ‘Think Health, Think Pharmacist’। দিবস উদযাপনের মূল লক্ষ্য ছিল জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে ফার্মাসিস্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরা।


সর্বশেষ সংবাদ