নর্থ সাউথে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

  © সৌজন্যে প্রাপ্ত

স্বাধীনতা সংগ্রামে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অমূল্য অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৪ পালিত হয়েছে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির একটি প্রতিনিধি দল সকালে ধানমন্ডির রায়ের বাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রধান, শিক্ষক, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির কর্মকর্তা, শিক্ষক উপদেষ্টা এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ক্লাবের সদস্যরা।

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনএসইউর অর্থনীতি গবেষণা প্ল্যাটফর্মের (ইআরপি) পরিচালক ও এনএসইউর অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আতিকুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনএসইউর উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সবাই এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এনএসইউর কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আব্দুর রব খান। তিনি বলেন, “আজকের দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি পাকিস্তানি হানাদারদের দোসরদের হাতে নিহত সকল বুদ্ধিজীবীকে। যে আদর্শের জন্য তাদের জীবন দিতে হয়েছে সে আদর্শকে সামনে রেখেই আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”

মূল আলোচনায় অধ্যাপক আতিকুর রহমান বলেন, “পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে যারাই বিভিন্ন আন্দোলনে জড়িত ছিলেন, যারা স্বাধীকার আন্দোলনে জড়িত ছিলেন, মুক্তমনা ছিলেন, যারা ভাষা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে যারা নেতৃত্ব দিতে সক্ষম তাদের সবাইকে চিহ্নিত করে হত্যা করা হয়। এটি শুধু মৃত্যু নয়, এটি ছিলো চরম নির্মম বর্বরতা।”

তিনি আরও বলেন, “শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আমাদের আরও কাজ করতে হবে। সামাজিক ন্যায়বিচার অর্জনের জন্য কাজ করতে হবে, সাম্যের ভিত্তিতে শোষণমুক্ত ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে কাজ করে যেতে হবে।”

অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী বলেন, “বিজয়ের আগে শত্রুপক্ষের উদ্দেশ্য ছিল এই জাতি স্বাধীন হলেও যেন বুদ্ধিবৃত্তিক বা মেধার দিক থেকে বিকশিত হতে না পারে। এটি ছিলে এমন একটি ক্ষতি যার ফল আমরা জাতি হিসেবে এখনও ভোগ করছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি সাম্প্রতিক জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের দিকে তাকাই, তাহলে এটা স্পষ্ট যে জাতি হিসেবে আমরা এখনও সংগ্রাম করছি। একটি স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে আমাদের ১০-১৫ বছর লাগার কারণ কী? এর কারণ লুকিয়ে আছে সেই ক্ষতির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব—আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ভিত্তির ক্ষতি। যে বুদ্ধিজীবীরা এই জাতিকে পথ দেখাতে পারতেন তাদের আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, যার ফলে আমরা দুর্বল হয়ে পড়েছি এবং স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী সরকারকে কার্যকরভাবে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারি নি।”


সর্বশেষ সংবাদ