‘ভালো চাকরির জন্য শিক্ষার্থীদের আরও বেশি জ্ঞান অর্জন করতে হবে’

গ্রিন ইউনিভার্সিটির ‘সিএসই কার্নিভালে’ আলোচকরা

গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে’র ‘সিএসই কার্নিভাল-২০২৪’-এ অতিথিরা।
গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে’র ‘সিএসই কার্নিভাল-২০২৪’-এ অতিথিরা।  © সৌজন্যে প্রাপ্ত

বেসরকারি গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে’র (জিইউবি) কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সিএসই কার্নিভাল-২০২৪’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই কার্নিভালে ‘ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া কোলাবরেশন’ সংক্রান্ত প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে’র (জিইউবি) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, রিভ গ্রুপের ডিরেক্টর ও প্রযুক্তিবিদ আজমত ইকবাল, গ্রিন ইউনিভার্সিটির অ্যালামনাই ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সজীব শিকদার ও মো. রিজোয়ান হোসাইন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ড. মো. আহসান হাবীব। 

‘সিএসই কার্নিভাল-২০২৪’-এ অতিথিদের সম্মাননা। ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

অনুষ্ঠানে আলোচকরা দেশের প্রচলিত ব্যবস্থায় ইন্ড্রাস্ট্রি এবং একাডেমিয়ার সম্পর্ক নিয়ে বিষদ আলোচনা করেন। এছাড়াও তরুণদের করণীয়, জ্ঞানার্জন, গবেষণা এবং উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন বক্তারা।

আরও পড়ুন: স্থায়ী সনদ পেল গ্রিন ইউনিভার্সিটি

একই সাথে আলোচকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি ইনকিউবেটর, বুট ক্যাম্পের মাধ্যমে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রজেক্ট, কোম্পানিগুলোর সাথে নিজেদের নেটওয়ার্ক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট, উদ্ভাবন, বাণিজ্যিকীকরণ ও উদ্যোক্তা তৈরির জন্য ইন্ডাস্ট্রি’র সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। তারা দেশের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি থেকে আগত অতিথিরা কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের চর্চা বৃদ্ধি, পড়াশোনার পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্যানেল আলোচনায় অধ্যাপক মো. আব্দুর রাজ্জাক নতুন বাংলাদেশ গঠনে জরুরি ভিত্তিতে শিক্ষা সংস্কার কমিশন ও আইসিটি ক্যাডার প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেন। এছাড়াও তিনি আউটকাম বেইজড এডুকেশনের প্রকৃত সুফল পেতে ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া কোলাবরেশনের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা এবং আর্থিক বরাদ্দ প্রদানের জন্য সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। 

সভায় রিভ গ্রুপের ডিরেক্টর ও প্রযুক্তিবিদ আজমত ইকবাল বলেন, শিক্ষার্থীদের তার ‘বেসিক নলেজ’ অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি নিজের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। নিজেকে দক্ষ হিসেবে প্রমাণ করতে হলে নিজের দক্ষতার উন্নয়ন করতে হবে। চাকরির বাজারে নিজেকে প্রমাণ করতে হলে সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। সেজন্য বড় ধরনের প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হওয়ার জন্য প্রস্ততি রাখতে হবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন: চীনের শীর্ষ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গ্রিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি

চীনের উদাহরণ দিয়ে আলোচনা সভায় গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে’র (জিইউবি) সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির বলেন, সেখানে কোনো নতুন কিছু আসলে তারা একাডেমিয়ার মাধ্যমে গবেষণা করে নিয়ে আসেন। সেখান ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে একাডেমিয়ার কোলাবরেশন খুবই ভালো এবং তাদের আয়ের অংশ গবেষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও পান। এটি দেশটিরা সরকারের সহায়তার কারণে সম্ভব হয়েছে এবং এর থেকে আমাদের শেখার সুযোগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

‘সিএসই কার্নিভাল-২০২৪’-এ অংশগ্রহণকারীরা। ছবি: সৌজন্যে প্রাপ্ত

এছাড়াও অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোয় তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টার্নশিপ চালুরও আহ্বান জানান। সেজন্য প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির (সিএসআর) অর্থ এখাতে ব্যয়ের পরামর্শও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে’র (জিইউবি) অ্যালামনাই এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সজীব শিকদার বলেন, আমরা নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী বা চাকুরি প্রার্থীদের স্কিল এবং নলেজগুলো দেখার চেষ্টা করি। সেজন্য তরুণদের কাজের ক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য সে বিষয়ে আরও বেশি জ্ঞানার্জনের আহ্বানও জানান তারা। 

আরও পড়ুন: গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে বর্ণিল আয়োজনে তিন দিনব্যাপী সিএসই কার্নিভ্যাল শুরু

গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে’র (জিইউবি) অ্যালামনাই ও তরুণ উদ্যোক্তা মো. রিজোয়ান হোসাইন বলেন, উদ্যোক্তা হতে হলে, যারা এগুলো নিয়ে কাজ করে তাদের সাথে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের বাধা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, সেজন্য আপনাকে সময় নিয়ে কাজ করতে হবে; অপেক্ষা করতে হবে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে বৈশ্বিক চাহিদা অনুধাবন করে শিক্ষার্থীদের নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে। এজন্য ছাত্রাবস্থায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। 

উপাচার্য বলেন, এখানে ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে একাডেমিয়ার বড় ধরনের দূরত্ব রয়েছে। এখানে আস্থার সংকট রয়েছে—আমাদের এ আস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। সেজন্য সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বানও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ