বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
শপিংমলের ভাড়া কক্ষে পাঠদান করছে স্থায়ী সনদ পাওয়া এশিয়া প্যাসিফিক
নিয়ম লঙ্ঘন কর্তৃপক্ষের, ভোগান্তি শিক্ষার্থীদের
- শিহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৩৪ PM , আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৩ PM
ভবনজুড়ে কাপড়-পোশাক, কসমেটিকস, খাবার, মোবাইল ও ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যের দোকান। আছে নানা ধরণের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অফিস। রয়েছে কোচিং সেন্টারও। এরই মধ্যে কিছু কক্ষ ভাড়া নিয়ে পাঠদান ও অফিস পরিচালনা করছে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ভবনটির একই ফ্লোরে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্লাসরুম এবং কোচিং সেন্টারসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের অফিস।
প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পরও এমন ভাড়া ভবন বা ভাড়া কক্ষের নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)। স্থায়ী ক্যাম্পাসের সনদ পেলেও প্রতিষ্ঠানটির কয়েকটি বিভাগের পাঠদান চলছে রাজধানীর ফার্মগেটে আর এইচ হোম সেন্টারে ভাড়া-করা স্থানে। মূল ক্যাম্পাসের পাশে অবস্থিত ভবনটির চতুর্থ তলার পুরোটি এবং পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলার কিছু অংশ ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ইউজিসির দফায় দফায় নির্দেশনা এবং স্থায়ী সনদ পাওয়া এবং তা ধরে রাখার অন্যতম প্রধান শর্ত ‘স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা’হলেও তা ভঙ্গের চিত্র দেখা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে। যদিও গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও পরিচালনার সনদ পেয়েছে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠা এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য একাডেমিক কাঠামোর পাশাপাশি অবকাঠামোগত সুবিধাও দরকার। শপিংমল কিংবা বাণিজ্যিক ভবনে ক্লাস নিলে শিক্ষার্থীরা অবকাঠামোগত সুবিধাটা পাবে না। এতে তাদের পড়ালেখায় মন বসবে না। তাছাড়া বাজার, মার্কেট কিংবা কোলাহলযুক্ত স্থানে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পাঠদান দেওয়া সম্ভব হয় না। একই সাথে আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখতে হবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে তাহলে নৈতিকভাবে তা সঠিক হচ্ছে না— অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, সাবেক চেয়ারম্যান, ইউজিসি
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ভবনটিতে মূলত সীমিত পরিসরে ক্লাস পরিচালনা করা হয়। পাশাপাশি কয়েকটি অফিসও রাখা হয়েছে। মূল ক্যাম্পাসের পাশে ভাড়া ভবন পরিচালনার করা যাবে না— এমন কোনো নির্দেশনা তারা ইউজিসি থেকে পায়নি। তাই সেখানে কার্যক্রম চলছে। তবে ইউজিসি জানিয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ধারাবাহিকতা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো নিজস্ব ক্যাম্পাস। সে আলোকেই এশিয়া প্যাসিফিকের জন্য স্থায়ী সনদের সুপারিশ করা হয়েছে। ভাড়া ভবনে ক্লাস নেওয়া বা অফিস পরিচালনার বিষয়টি ইউজিসিকে জানানো হয়নি।
আর এইচ হোম সেন্টারের ফ্লোর বোর্ডে ইউএপির নাম
শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছর কয়েক আগেও অলি-গলি ও ভবনে ভবনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠার কারণে রাজধানীর আলাদা পরিচিতি ছিল। বেসরকারি এসব উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান নিয়েও ছিল ঢের প্রশ্ন। ওইসময় মহাসড়কের পাশে, মার্কেটের ভেতরে, রেস্টুরেন্ট-আবাসিক ভবন ও হোটেলের উপরে, বাসস্টেশন এমনকি কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারের পাশেও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস দেখা গেছে। আবাসিক এলাকায় ফ্লোর ভাড়া নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার নজির তো ছিলই। তবে তদারক সংস্থা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কঠোর অবস্থান এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বাধ্যবাধকতা থাকায় সেই সংস্কৃতি এখন নেই বললেই চলে। তবে এর মধ্যেও এশিয়া প্যাসিফিকের ভাড়া ভবনে ক্লাস নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে নেতিবাচক ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরাও।
আরও পড়ুন: ভাড়া ক্যাম্পাসে কার্যক্রম, তবুও স্থায়ী সনদ মিলল ড্যাফোডিলের
ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার জন্য একাডেমিক কাঠামোর পাশাপাশি অবকাঠামোগত সুবিধাও দরকার। শপিংমল কিংবা বাণিজ্যিক ভবনে ক্লাস নিলে শিক্ষার্থীরা অবকাঠামোগত সুবিধাটা পাবে না। এতে তাদের পড়ালেখায় মন বসবে না। তাছাড়া বাজার, মার্কেট কিংবা কোলাহলযুক্ত স্থানে শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে পাঠদান দেওয়া সম্ভব হয় না। একই সাথে আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখতে হবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে তাহলে নৈতিকভাবে তা সঠিক হচ্ছে না বলে জানান এই শিক্ষাবিদ।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ ৭ বছর। তবে প্রয়োজন সাপেক্ষে এ সাময়িক অনুমতি সর্বোচ্চ ৫ বছর বৃদ্ধি করা যাবে। সে হিসাবে আইন অনুযায়ী ১২ বছরের মধ্যেই অর্থাৎ ২০০৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা। তবে প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পর ২০২২ সালের জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সনদ পায় ইউএপি
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় ধানমন্ডি ৪/এ সড়কে অবস্থিত ছয় তলা একটি বাড়ির পঞ্চম ও ষষ্ঠতলায়। ওই দুই ফ্লোরের পাশাপাশি বিপরীত পাশের একটি ভবনে ইইই ও ধানমন্ডি লেকের অদূরের একটি ভবনে চলেছিল প্রতিষ্ঠানটির বিবিএ’র ক্লাস ও অফিস কার্যক্রম।
তবে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকার অনুমোদিত ভূমি ও পর্যাপ্ত অবকাঠামোর মধ্যে নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর বাধ্যবাধকতা থাকায় ২০১৬ সালে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ গ্রীন রোডে স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। তবে প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পরও মূল ভবনের পাশাপাশি ভাড়া ভবনে পাঠদান করছে দেশের অন্যতম এই উচ্চশিক্ষালয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর ফার্মগেটস্থ গ্রীন রোডের ৭৪/এ ভবনটি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের নিজস্ব ক্যাম্পাস। এই ক্যাম্পাসের পাশেই ৭৪/বি/১ এর আরএইচ হোম সেন্টারের বিল্ডিংটিতে কয়েকটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে বর্তমানে সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। এ শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের জন্য স্থান সংকুলান না হওয়ায় নবীন শিক্ষার্থীদের ক্লাস পাশের ভাড়া করা আরএইচ হোম সেন্টারের একাধিক ফ্লোরে নেওয়া হয়। এছাড়া মাস্টার্সে অধ্যয়নরত বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসও ওই ভবনে নেওয়া হয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ভবনটির পূর্ব দিকে চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ তলার কিছু অংশ ভাড়া নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চতুর্থ তলার পুরো ফ্লোরটি ভাড়া নেওয়া হলেও পঞ্চম এবং ষষ্ঠ তলার একটি করে বড় কক্ষ ভাড়া নিয়ে ক্লাস নিচ্ছে। ফ্লোর দুটিতে একাধিক অফিসও রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি; যার নিচতলায় শপিং মল, ফাস্ট ফুড দোকান এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কোচিং সেন্টারসহ বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
জানা গেছে, ভবনটির চতুর্থ তলায় এশিয়া প্যাসিফিকের ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (বিবিএ) অফিসসহ ক্লাস রুম রয়েছে। ফ্লোরটিতে বিবিএ’র পাশাপাশি অন্য বিভাগের ক্লাসও নেওয়া হয় মাঝে মাঝে। পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় রয়েছে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) এবং আইন বিভাগের ক্লাসরুম। তিনটি ফ্লোরই ভাড়া করা বলে জানিয়েছেন সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ভাড়া ক্যাম্পাসে টিউশন ফি কিংবা ভর্তি ফি কোনো কিছুই জমা নেওয়া যাবে না। সেখানে ক্লাস নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারা এ ধরনের কার্যক্রম এখানে পরিচালনার কথা আমাদের জানায়নি। এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে স্থায়ী সনদ ফিরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হবে— অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, সদস্য ইউজিসি
শিক্ষার্থীরা জানান, চতুর্থ তলায় ক্লাস করতে খুব বেশি অসুবিধা না হলেও পঞ্চম ও ষষ্ঠ তলায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অফিস থাকায় ঝক্কি পোহাতে হয়। তাদের বক্তব্য, ভবনের লিফটগুলোয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অন্যান্য অফিসের লোকজন এবং বহিরাগতরা ওঠানামা করেন। এতে নারী শিক্ষার্থীদের প্রায়ই বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়। লিফটে সার্বক্ষণিক একজন নিরাপত্তা প্রহরী রাখা প্রয়োজন বলেও জানান তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের এক ছাত্রী জানান, ‘মার্কেট মাড়িয়ে ক্লাসরুমে ঢুকলে যা হয়, আমাদের অনুভূতি তেমনই। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’বিবিএ চতুর্থ সেমিস্টারের আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমাদের অনেকটা জোর করেই এই ভবনে ক্লাস করতে পাঠানো হয়। যেখানে মূল ক্যাম্পাসের ফিল (অনুভূতি) ওইভাবে পাওয়া যায় না। আমরা মূল ক্যাম্পাসেই ক্লাস করতে চাই।’
অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভাড়া ক্যাম্পাসটি অনেকদিন আগের। সেখানে মূলত প্রশাসনিক কাজ হয়। এছাড়া অল্প কিছু ক্লাস নেয়া হয়ে থাকে। ক্যাম্পাসের পাশের ভবনে ক্লাস নেওয়া যাবে না মর্মে কোনো নির্দেশনা ইউজিসি থেকে দেওয়া হয়নি। নির্দেশনা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।
বহিরাগতদের লিফট ব্যবহার প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান জানান, আরএইচ হোম সেন্টারে পূর্ব দিকে দুটি লিফট রয়েছে। একটি কেবল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। বিষয়টি দেখভাল করতে একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে মাঝে মাঝে ভুল করে বহিরাগত কিংবা অন্য অফিসের লোকজন আমাদের লিফট ব্যবহার করে থাকতে পারে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্থায়ী সনদ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ড. মো. ফরহাদ হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ইউজিসির সুপারিশ করায় ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিককে স্থায়ী সনদ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তারাই ভাল বলতে পারবে। তিনি আরও বলেন, শর্ত না মানলে সনদ বাতিলের বিধানও রয়েছে। ইউজিসি সুপারিশ করলে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী সনদ বাতিলের বিষয়টি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, স্থায়ী সনদ পাওয়ার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ভাড়া করা ভবনে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে কোনো শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হলে সেটি অবৈধ। আমরা জানি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ক্যাম্পাস একটি। সেখানেই তারা তাদের সমগ্র শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তারা ভাড়া করা ভবনে ক্লাস পরিচালনা করছে- এ বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।
শর্ত পূরণ না করলে স্থায়ী সনদ ফিরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হবে জানিয়ে এই ইউজিসি সদস্য জানান, ভাড়া ক্যাম্পাসে টিউশন ফি কিংবা ভর্তি ফি কোনো কিছুই জমা নেওয়া যাবে না। সেখানে ক্লাস নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তারা এ ধরনের কার্যক্রম এখানে পরিচালনার কথা আমাদের জানায়নি। এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে স্থায়ী সনদ ফিরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক অনুমতির মেয়াদ ৭ বছর। তবে প্রয়োজন সাপেক্ষে এ সাময়িক অনুমতি সর্বোচ্চ ৫ বছর বৃদ্ধি করা যাবে। সে হিসাবে আইন অনুযায়ী ১২ বছরের মধ্যেই অর্থাৎ ২০০৮ সালে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা। তবে প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পর ২০২২ সালের জুন মাসে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সনদ পায় ইউএপি।
অন্যদিকে, স্থায়ী সনদ পাওয়ার এক বছর পরও এখনও ভাড়া করা ভবনে আংশিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিষয়টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর লঙ্ঘন করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইউজিসি বলছে, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক তাদের সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম স্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালনার শর্তে স্থায়ী সনদ পেয়েছে। ফার্মগেটের নিজস্ব ভবনে তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস। এর বাইরে অন্য কোথাও পাঠদানের অনুমতি তাদের দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ভাড়া করা ভবনে ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে কোনো শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হলে সেটি অবৈধ।