ঢাবিতে শাস্তি পাওয়া শিক্ষক হলেন মানারাতের কোষাধ্যক্ষ

ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান
ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একাডেমিক পরীক্ষার ফলাফলে অনিয়ম প্রমাণিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটির (সিন্ডিকেট) সভায় শাস্তি পাওয়া এক শিক্ষক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি’র কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তার নাম ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক। আগামী চার বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। 

জানা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে সিন্ডিকেট সভায় ওই বিভাগের পরীক্ষার ফলাফলে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খানসহ আরও এক শিক্ষককে তিন বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।  

আরও পড়ুন: পরীক্ষার ফলে অনিয়ম করায় ঢাবির দুই শিক্ষককে অব্যাহতি

সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, “ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৭ সালের ৩য় বর্ষ ৬ষ্ঠ সেমিস্টার বিএ (সম্মান) পরীক্ষার ফলাফলে ব্যাপক অসংগতি রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শৃঙ্খলা পরিষদের (২৯ জানুয়ারি, ২০১৯) সুপারিশ ও সিন্ডিকেটের (৩০ জানুয়ারি, ২০২২) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন বছরের জন্য পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম থেকে ওই দুই শিক্ষককে (অধ্যাপক ছবুর খান ও অধ্যাপক বাহাউদ্দিন) বিরত রাখা হলো।” ওই পরীক্ষার ১ম ও ২য় বার টেবুলেশন সংক্রান্ত সব বিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাগারে ফেরত দিতেও বলা হয়েছিল বিজ্ঞপ্তিতে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই শিক্ষকের অপরাধের মাত্রা বেশি হলে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি হারাতেন তিনি। তবে তাকে তিন বছরের জন্য শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সংক্রান্ত সব কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। সে হিসেবে তিনি অন্য কোথাও যেতে পারবেন না কিংবা যাওয়া নিষেধ তা নিয়ে আইনগতভাবে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। তবে বিষয়টি নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ এবং নৈতিকভাবে তাকে নিয়োগ দেওয়া ঠিক হয়নি।

জানতে চাইলে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমার জানা মতে, ট্রাস্টি বোর্ডের সভা করে করে ট্রেজারার নিয়োগের তালিকা বা এ নিয়ে কেনো আলোচনা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হয়তো তালিকা করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে, পরে গোয়েন্দা সংস্থা খোঁজ-খবর নিয়ে ওই শিক্ষককে নিয়োগ দিতে পারে।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা কর্তৃক তার কতটুকু শাস্তি হয়েছে, সেটি গুরুত্বর কিনা— এসব বিষয় আমলে নেওয়া সুযোগ রয়েছে। তবে যে শাস্তি হয়েছে তাতে অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের তার যাওয়ার আইনগত কোনো বাঁধা নেই। তবে নৈতিকভাবে প্রশ্ন থেকে যায়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়টির আচার্যের অনুমোদনক্রমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ৩৩ (১) অনুযায়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খানকে কোষাধ্যক্ষ পদে তিন শর্তে নিয়োগ প্রদান করা হলো।

এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে- কোষাধ্যক্ষ পদে তার নিয়োগের মেয়াদ হবে যোগদানের তারিখ হতে চার বছর। তবে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য প্রয়োজনে যে কোনো সময় এই নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে পারবেন; তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন এবং পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন; তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন।

জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence