কুষ্টিয়ায় লালনের নামে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন

শিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা মন্ত্রণালয়  © ফাইল ছবি

কুষ্টিয়ার সাধক লালন ফকিরের নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দিয়েছে সরকার। বুধবার (১৪ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা-১ থেকে পাঠানো এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। নতুন অনুমোদিত বেসরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম হবে ‘লালন বিজ্ঞান ও কলা বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া’।

মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, উপযুক্ত বিষয়ে নির্দেশক্রমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা অনুযায়ী বর্ণিত শর্তসমূহ প্রতিপালন সাপেক্ষে প্রস্তাবিত ‘লালন বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া স্থাপন অনুযায়ী অনুমতি প্রদান করা হলো।

কুষ্টিয়ার হাউজিং এস্টেট এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে যাওয়া লালন বিজ্ঞান ও কলা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান হিসেবে মিসেস ফৌজিয়া আলমও বলেও জানানো হয়েছে ওই প্রজ্ঞাপনে।

আরও পড়ুন: অপরিকল্পিত উচ্চশিক্ষায় দেশের অর্থ ও মেধার অপচয়

অনুমোদনের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের উচ্চ শিক্ষার তদারক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদিত সকল নীতিমালা অনুসারে পাঠদানে যেতে পারবে। এছাড়া দেশে প্রচলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর সকল ধারাও তাদের মানতে হবে উচ্চ শিক্ষা তৎসংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে।

দেশে বর্তমানে সর্বশেষ অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়টিসহ মোট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১১৪। গতমাসের শেষের দিকে ‘বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি, কাদিরাবাদ’ নামে নতুন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের অনুমোদন দেয় সরকার। ওই বিশ্ববিদ্যালয় হবে নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে।

বর্তমানে দেশে ১১৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয় চালু রয়েছে। তবে নানা জটিলতায় ৪টি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রম শুরুই করতে পারেনি। এছাড়া মামলা জটে আরও প্রায় ৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের উপক্রম। এর মধ্যে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী সংকটে ধুঁকছে। আর্থিক সংকট, অনিয়মে আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থাও করুণ। গুটিকয়েক বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছে।

করোনাকালীন তহবিল সংকট দেখিয়ে এর মধ্যে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মকর্তাদের আংশিক বেতন দিচ্ছে। ভাড়ায় নেওয়া ভবন ছেড়ে দিচ্ছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়, এতে করে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকানা পরিবর্তনের মতো ঘটনাও রয়েছে। তবুও থামছে না নতুন বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদনের আবেদন।

অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কমপক্ষে ১১৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনের জন্য আবেদন জমা পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এর মধ্যে ৫টি প্রতিষ্ঠার সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু করেছে। এ উপলক্ষে গত ১৯ মে একটি প্রকল্প সরেজমিনে পরিদর্শন করেছে ইউজিসির কর্মকর্তারা। 

ইউজিসি কর্মকর্তা বলছেন, নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রক্রিয়া জানতে প্রতিনিয়তই খোঁজখবর নিচ্ছেন। এর মধ্যে আবেদন জমা দিয়েছেন একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তারা জোর তদবির চালাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেখানে ভালো চলছে না, নতুন প্রতিষ্ঠান সেখানে কিভাবে চলবে, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশিত হচ্ছে।  


সর্বশেষ সংবাদ