অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির আহবান ড. ফরাসউদ্দিনের
- ইস্ট ওয়েস্ট প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৩, ১০:১১ PM , আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৩, ১০:১১ PM
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইডব্লিউইউ) প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, গত বায়ান্ন বছরে বাংলাদেশ অনেক অর্জন করেছে; বিশ্বে যা মাইলফলক অর্জন করেছে।
রবিবার (১৯ মার্চ) ইডব্লিউই ‘র ফার্মেসি ডিপার্টমেন্টের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, সকলকে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে হবে; দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বানও জানান তিনি।
ইডব্লিউই ‘র উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এম. শহীদুল হাসানের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স একটি নীরব ঘাতক এবং বৈশ্বিক সম্ভাবনায় বাংলাদেশের দৃশ্যপট বিষয়কে সামনে রেখে আলোচনা সভার সূচনা করা হয়৷ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
ড. মো. আনোয়ার বলেন, যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক লিখা ও রোগীদের সে অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স শেষ না করা, অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার, অদক্ষ ব্যক্তি দ্বারা অ্যান্টিবায়োটিক লিখা, বিনা প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয় করার কারণে এর তা আমাদের কাছে সহজে এসে পড়ছে৷
এ সময় তিনি রেজিষ্টাস্ট প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয় না করা, জনসচেতনতা সৃষ্টি, হাসপাতালে দক্ষ জনবল ও যন্ত্রপাতি থাকা, কারণ উদঘাটনের জন্য প্রত্যেক জেলায় ল্যাব তৈরি করা ও ঢাকায় রেফারেন্স ল্যাব তৈরি করা, মডেল ফার্মেসি তৈরি ও সেখানে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ, অ্যান্টিবায়োটিক ডোজ কমানো ও কোর্স সমাপ্তি করা এবং ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলোর অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ কমানোর রেগুলেট করার আহ্বান জানান।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও রেডিয়েন্ট ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সম্মানিত চেয়ারম্যান মো. নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তিনি বলেন, প্রতিটি হাসপাতালের প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক প্রোটোকল থাকা উচিৎ; যাতে ডাক্তাররা তা অনুশীলন করতে পারে, ফার্মেসিতে প্রোটোকল প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রয় না করে, যতদূর সম্ভব হাসপাতালে গ্রাজুয়েট ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেওয়া, সত্যিকার অর্থে মডেল ফার্মেসি তৈরি করা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টি করা তবেই আমরা অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্ট প্রতিরোধ করতে পারবো।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মানিত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস রোগজীবাণুর মৃত্যু ঘটায়। কিন্তু ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক এর বিরুদ্ধে রেসিস্টেন্স হতে শুরু করে। বর্তমানে পুরো পৃথিবীতে এর প্রভাব বিস্তার ঘটছে এবং এটা মানুষের জন্য মরণঘাতি হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল ব্যবহার, যত্রতত্র ব্যবহার, সহজে ক্রয়লভ্য, পরিবেশ দূষণ, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ময়লা আবর্জনা ফেলা যার কারণে নতুন নতুন ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ বেড়েছে এবং এগুলো প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। তাই তিনি এসব সমস্যা সমাধানের তাগিদ দেন এবং ডাক্তারদের যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক না লিখার আহ্বান জানান।
ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. সুফিয়া ইসলামের সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে আলোচনা সমাপ্তি করা হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক মামুন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এয়ার কমডোর (অবঃ) ইশফাক এলাহী চৌধুরী, অনুষদ ডিন, আইসিডিডিআরবি সদস্য, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, ফার্মেসি ডিপার্টমেন্টের সাবেক চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. চৌধুরী ফয়েজ হোসেন, অধ্যাপক ড. শামসুন নাহার খান।
এছাড়াও সভায় ছিলেন সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারহানা রিজওয়ান, সহযোগী অধ্যাপক ড. নাজিয়া হক, সহযোগী অধ্যাপক ড. রেজিনা আফরিন, সহকারী অধ্যাপক ড. ফারজানা খাতুন, সহকারী অধ্যাপক ও এসিস্ট্যান্ট প্রক্টর ড. শওকত আমিনুল ইসলাম সহ ফার্মেসি ও অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা।