খালেদা জিয়া ছিলেন চীনা জনগণের পুরনো বন্ধু: চীনের প্রধানমন্ত্রী

খালেদা জিয়া ও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং
খালেদা জিয়া ও চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং  © টিডিসি

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি চিয়াং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। চীনের প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একটি শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। আর শোক জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে চিঠি পাঠিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ ছাড়া ঢাকায় চীনা রাষ্ট্রদূত শোকবার্তা পাঠিয়েছেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে।

প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা শোকবার্তায় চীনা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদায়ে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। চীন সরকারের পক্ষ থেকে আমি বাংলাদেশ সরকার এবং খালেদা জিয়ার পরিবারকে গভীর শোক ও আন্তরিক সহমর্মিতা জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রবীণ রাজনীতিক এবং চীনা জনগণের পুরোনো বন্ধু। তার প্রধানমন্ত্রীত্বের সময়ে সহযোগিতার সমন্বিত অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিল চীন ও বাংলাদেশ। দীর্ঘমেয়াদী বন্ধুত্ব, সমতা ও পারস্পরিক মঙ্গলের বৈশিষ্ট্য নিয়ে গড়া এই অংশীদারত্ব দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির পথ তৈরি করেছিল। চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নে চীন তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করছে।’

দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরে লি চিয়াং বলেন, ‘চীন ও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে মূল্য দেয় চীন; পাশাপাশি চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের অগ্রগতিতে গুরুত্ব আরোপ করে।’

তিনি বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে এবং দুদেশের জনগণের কল্যাণে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চীন প্রস্তুত।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে লেখা চিঠিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই দুঃখজনক সময়ে আপনার প্রতি আমার গভীর সমবেদনা ও আন্তরিক সহানুভূতি জানাচ্ছি।’

চিঠিতে বলা হয়, ‘বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের একজন প্রবীণ রাজনীতিক ছিলেন, যিনি চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এবং চীন–বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে সমর্থন দিয়েছেন। তার প্রধানমন্ত্রীত্বকালে চীন ও বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী বন্ধুত্ব, সমতা ও পারস্পরিক লাভের ভিত্তিতে সমন্বিত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করে। চীন–বাংলাদেশ সম্পর্কের বিকাশে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে চীন উচ্চ মূল্য দেয়।’

‘দুই দেশের পুরোনো নেতাদের গড়ে তোলা দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাস্তবমুখী সহযোগিতা জোরদার করতে এবং চীন–বাংলাদেশ সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাওয়ার কথা’ বলেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আর তারেক রহমানকে লেখা চিঠিতে ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘গভীর দুঃখ ও বেদনাহত হৃদয় নিয়ে আমি বিএনপি চেয়ারপারসন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আপনার প্রিয় মা বেগম খালেদা জিয়ার বিদায়ে গভীর শোক জানাচ্ছি।’

চীনা প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোকবার্তা পাঠানোর কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে মূর্ত করে তুলেছিলেন এবং স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি অবিচল ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘তার নেতৃত্ব জাতির ইতিহাস নির্মাণে ভূমিকা রেখেছে এবং তার দৃঢ়তা অনুপ্রাণিত করেছে জনগণকে। তিনি ছিলেন চীনের এমন প্রিয় বন্ধু, যার অবদান আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে স্থায়ী চিহ্ন এঁকে দিয়েছে। চীনা জনগণ গভীর কৃতজ্ঞতা ও সর্বোচ্চ সম্মানের সঙ্গে তাকে মনে রাখবে।’

তারেক রহমানকে রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, ‘আপনার নেতৃত্বে বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি।’


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!