বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে তারেক রহমান দেশের মাটিতে নামবেন: মির্জা ফখরুল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:১৭ AM
বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর ঢাকার মাটিতে নামবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব ২০০২ সালে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাষ্ট্রীয় সফরের সময়ে তারেক রহমানের সাথে পরিচিত হওয়ার সময়ে চীনের প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্য তুলে ধরে এই কথা জানান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনের পরে ২০০২ সালে আমরা চীনে গিয়েছিলাম আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে। সঙ্গে আমাদের নেতা (তারেক রহমান) ছিলেন। যখন গ্রেট হলে ম্যাডামকে গার্ড দেয়া হচ্ছে, যখন পরিচয়ের পর্ব এসেছে। যখন আমাদের নেত্রী চীনের প্রধানমন্ত্রীকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আমার পাশে একজন নেতার পরে তারেক রহমান ছিলেন। যখন ম্যাডাম চীনের প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, হি ইজ মাই সান…আমার ছেলে। আমার এখনো মনে আছে, চীনের প্রধানমন্ত্রী তার হাতটি শক্ত করে দুই হাত ধরে বললেন, 'ক্যারি দ্যা ফ্ল্যাগ অব ইউর ফাদার এন্ড মাদার… তোমার পিতা আর মাতার পতাকা উড্ডীন করে ফলো।’
সেই যে জাতীয়তাবাদী পতাকা, স্বাধীনতার পতাকা গণতন্ত্রের পতাকা এই পতাকা নিয়ে তারেক রহমান ২৫ তারিখে বাংলাদেশে আসছেন। আমরা সবাই সেদিন জেগে উঠব। আমরা গণতন্ত্রের জন্য, আমাদের স্বাধীনতার জন্য, সার্বভৌমত্বের জন্য আমরা অবশ্যই সবাই উঠব।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আলোচনা সভার শুরুতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: আজ মহান বিজয় দিবস, জাতির গৌরবময় দিন
জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ২৪ এর জুলাই যোদ্ধা যারা আছে তাদের অনেকের মধ্যে শঙ্কা আছে এই অন্তবর্তীকালীন সরকারের পরে নতুন সরকার আসলে তাদের নিরাপত্তার কি ব্যবস্থা হবে? আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, জনগনের ভোটে আমরা যদি নির্বাচিত হয়ে আসি আমরা নিশ্চিত করব যে, জুলাই যোদ্ধাদের নিরাপত্তা দেবো ইনশাল্লাহ, তাদেরকে কোনো রকমের অনিরাপত্তার ঝুঁকিতে যেতে দেবো না।
ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলো সেই রাজনৈতিক শক্তি ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানেরও বিরোধিতা করেছিলো। তারা আজকে নতুন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে চায়, তারা গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়, মানুষের আশা-আকাংখাকে নস্যাৎ করতে চায়। আগামী নির্বাচন হবে এদেশে কি উদার গণতান্ত্রিক দেশ গড়ব নাকি একটা পশ্চাৎপদের দিকে চলে যাবো, এই নির্বাচনে সেই সিদ্ধান্ত হবে। আজকে বিভিন্ন রকম ধুঁয়া তুলে, মিথ্যা কথা বলে বিএনপিকে হেয় প্রতিপন্ন করবার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের বন্ধু, আমাদের সহকর্মী, আমাদের সন্তান হাদির ওপরে আক্রমন হয়েছে, আমরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছি, সারাদেশে বিক্ষোভ করেছি এবং অবিলম্বে হত্যাকারীকে পুঁজি বের করবার জন্য আমরা আহবান জানিয়েছি। আক্রমণকারীকে চিহ্নিত করা হয়েছে… দেখা গেছে সে হচ্ছে আওয়ামী লীগের একজন খুনি আওয়ামী লীগের একজন সন্ত্রাসী। আজকে কেনো তারা বলে যে, বিএনপিকে জবাব দিতে হবে, কী কারণে। উদ্দেশ্য একটাই বিএনপিকে তারা হীন উদ্দেশ্যে চিহ্নিত করতে চায়।
আরও পড়ুন: হাদিকে গুলি: মূল অভিযুক্ত ফয়সালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গ্রেপ্তার
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, নতুন প্রজন্ম ইতিহাস জানেন না, গল্পও শুনতে চান না। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন এ কথাটা সত্যি। উনি ঘোষণা দিয়ে কি ঘুমিয়েছিলেন? উনি যুদ্ধ করেছেন এবং বাংলাদেশের যে কয়টি সেক্টর ছিল সকল সেক্টর কমান্ডারের অফিস ছিল ভারতের সীমানার ভিতরে।
একমাত্র শহীদ জিয়াউর রহমানের অফিস ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থেকে তিনি নিজ হাতে অস্ত্র নিয়ে ব্যাংকারে থেকেছেন , মাঠে যুদ্ধ করেছেন। সেজন্য আমরা আজকে তার গর্বিত সৈনিক।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান,সালাহ উদ্দিন আহমদ, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচারয অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, যুব দলের নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।