গাজীপুর-২ আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবি বিএনপির একাংশের

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন  © টিডিসি ফটো

গাজীপুর-৬ আসন বিলুপ্তির ফলে পুনর্গঠিত গাজীপুর-২ সংসদীয় আসনে বিএনপির বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার জোরালো দাবি উঠেছে। ভোটার বাস্তবতা, ভৌগোলিক ভারসাম্য ও নির্বাচনী সক্ষমতার যুক্তিতে মনোনয়ন পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে গাজীপুরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আপিল বিভাগের রায়ের মাধ্যমে গাজীপুর-৬ আসন বাতিল হয়ে পূর্বের গাজীপুর-২ আসনে ফিরে আসায় এ আসনের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী বাস্তবতায় মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে গাজীপুর-২ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ, যা এটিকে দেশের অন্যতম বৃহৎ ও চ্যালেঞ্জিং আসনে পরিণত করেছে।

বক্তব্যে থানা ও ওয়ার্ডভিত্তিক ভোটার পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানানো হয়, গাছা থানার ৭টি ওয়ার্ডে ভোটার ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০৯ জন এবং পূবাইল থানার আংশিক অংশে (ওয়ার্ড-৩৯) ভোটার ১৩ হাজার ২৮৬ জন। অর্থাৎ গাছা ও পূবাইল মিলিয়ে ভোটার ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৫ জন। অপরদিকে টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানার ১৫টি ওয়ার্ডে ভোটার ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫৯ জন এবং মেট্রো সদর থানার ১৩টি ওয়ার্ডে ভোটার ২ লাখ ৪৮ হাজার ২০ জন। এর মধ্যে কাউলতিয়া এলাকার চারটি ওয়ার্ডে ভোটার মাত্র ৭৩ হাজার ৭৩৮ জন। এতে স্পষ্ট হয়, গাজীপুর-২ আসনের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল এলাকায় বসবাস করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন বাস্তবতায়—যখন গাজীপুর-৬ আসন বহাল ছিল এবং টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল আলাদা সংসদীয় আসনের আওতায় ছিল। নতুন বাস্তবতায় সেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা রাজনৈতিকভাবে যৌক্তিক ও সময়োপযোগী। বক্তারা স্পষ্ট করেন, এটি কোনো ব্যক্তিবিরোধিতা নয়; বরং দলীয় স্বার্থ, ভোটার প্রতিনিধিত্ব ও বিজয়ের সম্ভাবনা নিশ্চিত করার প্রশ্ন।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল একটি অভিন্ন নগর বাস্তবতার অংশ। অতীতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠনের আগে এই এলাকাগুলো টঙ্গী পৌরসভার আওতায় ছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে একই সামাজিক-রাজনৈতিক ধারায় পরিচালিত হয়ে আসছে। ঐতিহাসিকভাবে এ আসনের নেতৃত্বও অধিকাংশ সময় টঙ্গীকেন্দ্রিক ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেও টঙ্গী থেকে নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে।

এ সময় বক্তারা আন্দোলন-সংগ্রামে গাজীপুর এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীদের ত্যাগ ও নির্যাতনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তাঁরা বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে বহু নেতাকর্মী জেল-জুলুম, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখল ও ভোট ডাকাতির মাধ্যমে বিএনপির প্রার্থীদের বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়, যার ফলে সংশ্লিষ্ট নেতারা রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগতভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েন।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, মহাসচিব ও কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, পুনর্গঠিত গাজীপুর-২ আসনের বর্তমান ভোটার ও ভৌগোলিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে টঙ্গী, গাছা ও পূবাইল এলাকার সাংগঠনিক মতামত গুরুত্বসহকারে শোনা হোক। প্রয়োজনে বর্তমান মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে এমন প্রার্থী মনোনীত করা হোক, যিনি এই বৃহৎ ও প্রতিযোগিতামূলক আসনে সর্বোচ্চ ভোট সংহত করে বিএনপিকে বিজয়ের পথে নিতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন গাজীপুর-২ আসনের সাবেক এমপি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি এসময় এ আসনে মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকারের প্রতি সম্মিলিত  সমর্থন ব্যক্ত করেন। এসময় আরো  উপস্থিত ছিলেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও মহানগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সালাহ উদ্দিন সরকার, সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, সাবেক সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি আফজাল হোসেন কায়সার, মহানগর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মাহবুবুল হক গোলাপ ও আক্তারুজ্জামান, মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সম্ভাব্য প্রার্থী জসিম উদ্দিন ভাট, বিএনপি নেতা সরকার শাহনূর ইসলাম রনি, যুবদল নেতা সৌমিক সরকারসহ বিএনপির বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence