ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এখনো আছে: জোনায়েদ সাকি
- পটুয়াখালী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৪ AM , আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৪ AM
আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছি, কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এখনো আছে—বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে গণসংহতি আন্দোলনের সংসদ সদস্য প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আমজাদ হোসেনের জানাজা ও দাফন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, দলগতভাবে আমরা প্রার্থীর তালিকা সম্পন্ন করেছি। কিন্তু যেহেতু ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের সময় আমরা ৬টি দল একটি গণতন্ত্র মঞ্চের মাধ্যমে কাজ করেছি, তাই গণতন্ত্র মঞ্চই আমাদের জোট। এই জোটের মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের আসনগুলো সমঝোতা করবো। সে ব্যাপারে আমাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত আছে। গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপিসহ আরও ৩৯টি দলের সঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন করেছে। আন্দোলনের সময়ই রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা, রাষ্ট্র মেরামতের সিদ্ধান্ত, রাজনৈতিক বন্দোবস্ত— এসব লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা লড়াই করেছি। ৩১ দফাকে সামনে রেখে সেই লড়াই এখনো চলমান। এসব পরিবর্তন করতে গেলে অবশ্যই আগামী সংসদ লাগবে, সেই পর্যন্ত এ লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা চলবে। সেদিক থেকে আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ ও বিএনপিসহ যুগপৎ আন্দোলনের দলগুলোর সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে সমঝোতার আলোচনায় আছি। কথাবার্তা চলছে, খুব শিগ্গিরই আমরা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবো।
সংবিধান সংস্কারের দাবি প্রথম তুলেছিলো গণসংহতি আন্দোলন উল্লেখ করে বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ প্রথম ছয় মাস একই সঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, গণভোট থেকে আমরা দুটি বিষয় অর্জন করবো। প্রথম বিষয়— এতদিন ধরে আমাদের জুলাই শহিদদের রক্তের ঋণ ও তাদের আকাঙ্ক্ষার যে সংস্কারগুলোর কথা আমরা চিন্তা করছি বা ঐকমত্য হয়েছি— সেগুলোই তো জুলাই সনদ। জুলাই সনদের বিষয়গুলো জনগণ ঠিক করবে। জনগণের মতামত ছাড়া এগুলো কোনো জায়গায় দাঁড়াবে না। এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আর এই জুলাই সনদ জনগণের থেকে অনুমোদনের জন্যই গণভোট। এটি জাতীয় নির্বাচনের একই দিনে আয়োজনকে আমরা ইতিবাচক মনে করছি। আর দ্বিতীয় বিষয়টি হলো— যে জাতীয় সংসদ গঠিত হবে, জনগণ তাকে এই ক্ষমতা দেবে যাতে সে সংবিধান সংস্কারের ক্ষমতা পায়। জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন সংসদ জনগণের রায়ে বাস্তবায়ন করবে। এই ক্ষমতার বলে জাতীয় সংসদের সিদ্ধান্তে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
আরও পড়ুন :৪৭-এর পথে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবোজ্জ্বল যাত্রা
গণসংহতি আন্দোলনের এই প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, আমরা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছি, কিন্তু ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা এখনো আছে। সেই ব্যবস্থার পতন ঘটিয়ে আমরা যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আনতে যাচ্ছি, সেখানে জনগণই থাকবে সকল ক্ষমতার মূল। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।
তিনি আরও বলেন, গত পরশুদিন নির্বাচন কমিশন আমাদের ডেকেছিলো। আমরা স্পষ্টভাবে তাদের বলেছি—স্টেকহোল্ডার, অংশীজন ও জনগণের যে প্রতিনিধিরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে আপনারা একতরফা আরপিও পরিবর্তন করলে সেটি ভালো হবে না, কার্যকরও হবে না। এখন আপনারা সবাইকে নিয়ে বসছেন— সবার আলোচনার মাধ্যমে যে প্রস্তাবগুলো আসবে, সেগুলো বিবেচনা করে আপনারা আরপিও পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।