রেলওয়ে পরিচালক
ডে-অফ থেকে বরাদ্দ, ১০-৩০% অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে জামায়াতকে ট্রেন দেওয়া হয়েছে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৯ PM , আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১ AM
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। শনিবার (১৯ জুলাই) অনুষ্ঠেয় এ সমাবেশকে ঘিরে এখন চলছে শেষ মহূর্তের আয়োজন-প্রস্তুতি। সংশ্লিষ্ট দলটি বলছে, সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের স্বাচ্ছন্দ্যে ঢাকায় আনতে দেশের কয়েকটি অঞ্চল থেকে ট্রেন বুকিং করা হয়েছে; যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এ ছাড়াও নির্বিঘ্নে রাজধানীতে আসতে ১০ হাজারও বেশি যাত্রীবাহী বাস বুকিং করা হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে বুকিং দেওয়া স্পেশাল রেলগুলো ঢাকা-রাজশাহী; ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-সিরাজগঞ্জ রুটে চলবে। এদিকে রেল বুকিংয়ের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট রেল কর্তৃপক্ষও দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছে ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ে বিভাগের পরিচালক, ট্রাফিক (পরিবহন) মো. জাকির হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আবেদনের মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চাইলেও ট্রেন বুকিং করতে পারবে। তাই নিয়ম অনুযায়ী জামায়াত ইসলামীকেও ট্রেন বুকিং দেওয়া হয়েছে। ডে-অফে (সাপ্তাহিক ছুটি) থাকা ট্রেনগুলো তাদের বুকিং দেওয়া হয়েছে। এতে নিয়মিত যাত্রীর কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। এ ছাড়াও জামায়াত যে ট্রেনগুলো বুকিং দিয়েছে; এর মধ্যে নন-এসিগুলোর ওপর ১০ শতাংশ ও এসি বগিগুলোর ওপর ৩০ শতাংশ অতিরিক্ত চার্জ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ম সবার জন্যই। আবেদনের মাধ্যমে ট্রেন বুকিং দিতে পারবেন যে কেউ।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর রেল বুকিং নিয়ে সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের দেওয়া একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে সরব হয়েছেন নেটিজেনরা। সরব হয়েছেন লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্যও।
জুলকারনাইন সায়ের তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, জামায়াতে ইসলামীর 'ঐতিহাসিক মহাসমাবেশ' উপলক্ষে ১. ঢাকা-রাজশাহী, ২. ঢাকা-ময়মনসিংহ, ৩. ঢাকা-সিরাজগঞ্জ, রুটে আগামী ১৯ জুলাই, তিন জোড়া ট্রেন বরাদ্দ করা হয়েছে। এই তিন-জোড়া ট্রেন জামায়াতের আবেদনের প্রেক্ষিতে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। দলটি এ সকল ট্রেনের সকল খরচ নিজেরা বহন করবে বলেও চিঠিতে প্রকাশ পেয়েছে। নাইস!’ পরে আরও একটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘আপনারা যারা বিয়েশাদি বা কোন অনুষ্ঠানে ফ্লেক্স করতে পছন্দ করেন, তাদের জন্যে একটা আইডিয়া দেই। আগামীতে এ ধরনের কোনো আয়োজন করলে একটা সম্পূর্ণ ট্রেন ভাড়া করতে পারেন, ভাড়াও বেশ কম, আপাতত জানা গেছে, ঢাকা-সিরাজগঞ্জ (উভয় পথ) ১ জোড়া ট্রেনের ভাড়া আসে ৪ লাখ টাকার মতো। আর ঢাকা-রাজশাহী (উভয় পথ) ১ জোড়া ট্রেনের ভাড়া আসে ১২ লাখ টাকা। সরকার যদি জামায়াতে ইসলামীর ঐতিহাসিক সম্মেলনের জন্যে একটি ট্রেন ভাড়া দিতে পারে, তাহলে সাধারণ জনগণের বিয়েশাদি, আকিকা, কনসার্ট, সমাবেশ ইত্যাদির জন্যেও দিতে পারা উচিত।’
জামায়াতের রেল বুকিংয়ের বিষয়ে পিনাকী ভট্টাচার্য ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী, যদি কাউকে ট্রেনে অনেক সিট দরকার হয়, তাহলে আলাদা করে আবেদন করতে হয়। তখন রেগুলার ট্রেনে অতিরিক্ত কোচ সংযুক্ত করে দেওয়া হয়। এসব কোচের ভাড়া সাধারণ ভাড়ার চেয়ে ২০-৩০ শতাংশ বেশি হয়। রেলওয়ের প্রায় প্রতিটি ট্রেনেই সপ্তাহে একদিন বন্ধ থাকে মেইনটেনেন্সের জন্য। যেমন রাজশাহী আর সিরাজগঞ্জগামী দুটি ট্রেন শনিবার বন্ধ থাকে। জামায়াত এ দুটো ট্রেনই রিজার্ভ করেছে।’
ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশে সাধারণত পুরো একটি ট্রেন রিজার্ভ করা খুবই কম দেখা যায়। স্কাউটদের কিছু জাতীয় কর্মসূচিতে এমন হয়েছে। যেমন, গতবার ৭ম জাতীয় কমডেকার-২০২৫-এর সময় পুরো ট্রেন রিজার্ভ দেওয়া হয়েছিল। এদিকে যেসব নোটিশ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, তার বাইরেও চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে জামায়াত একটি স্পেশাল ট্রেন নিয়েছে, যেটা স্পেয়ার কোচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এই ট্রেনের ক্ষেত্রেও বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করতে হয়েছে। এই এক্সট্রা কোচ বুক করা খুব সাধারণ একটা বিষয়।
যেমন কক্সবাজারগামী ট্রেনে প্রায়ই কোনো কোম্পানি বা গ্রুপ একসাথে কয়েকটা কোচ রিজার্ভ নেয়। কক্সবাজার রুটে ৫-৬টি কোচ সবসময় রিজার্ভ থাকে। সুতরাং, জামায়াত কারও ট্রেন বাতিল করে বা কারও সুযোগ কেড়ে নিয়ে কিছু করেনি। রুটিন অনুযায়ী বন্ধ থাকা ট্রেন তারা পেয়েছে এবং যথাযথ ভাড়াও পরিশোধ করেছে।’