এইচআরএসএস-এর প্রতিবেদন

২০২৫-এ ৪৪০ সংঘর্ষে বিএনপি: নিহত ৬৪, আহত ৩৬৩১

 বিএনপি ও এইচআরএসএ ‘র লোগো
বিএনপি ও এইচআরএসএ ‘র লোগো  © টিডিসি সম্পাদিত

২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। সংগঠনটির মতে, জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে সারাদেশে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, দলীয় আধিপত্য, কমিটি গঠন ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত বিরোধে ৫২৯টি সহিংস সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৭৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ১২৪ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৪০ সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপি, যার মধ্যে নিহত ৬৪ ও আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৬৩১ জন। 

সংঘর্ষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে। এইচআরএসএস জানায়, শুধু বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকেই ৩০২টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, যাতে নিহত হন ৪৬ জন এবং আহত হন ২ হাজার ৮৩৪ জন। বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে ২৬টি সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন ২১৬ জন ও নিহত হয়েছেন ২ জন। এছাড়া বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ১০১টি সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত এবং ৫০২ জন আহত হন।

আজ সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় মানবাধিকার সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এইচআরএসএস’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে কমপক্ষে ৫২৯ টি ‘রাজনৈতিক সহিংসতার’ ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৭৯ জন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪ হাজার ১২৪ জন। আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক প্রতিশোধ পরায়ণতা, কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন স্থাপনা দখল কেন্দ্রিক অধিকাংশ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতার ৫২৯ ঘটনার মধ্যে বিএনপির অন্তর্কোন্দলে ৩০২ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২ হাজার ৮৩৪ জন ও নিহত ৪৬ জন। এসময়ের মধ্যে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ১০১টি সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫০২ জন ও নিহত ১৬ জন। 

এছাড়া বিএনপি-এনসিপির মধ্যে ১১ সংঘর্ষের ঘটনা আহত হয়েছেন ৭৯ জন এবং আওয়ামী লীগ-এনসিপির মধ্যে ১৮টি সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৫৪ জন ও নিহত ১ জন। আওয়ামী লীগ-জামায়াতের মধ্যে ৭টি সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৯ জন ও নিহত ১ জন, আওয়ামী লীগের অন্তর্কোন্দলে ১৩টি ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৫৩ জন ও নিহত ৭ জন, এনসিপির অন্তর্কোন্দলে ১২টি ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৭ জন এবং ৪২টি ঘটনা ঘটেছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে। 

নিহত ৭৯ জনের মধ্যে বিএনপির ৫৪ জন, আওয়ামী লীগের ১৭ জন, জামায়াতের ২ জন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ১ জন এবং ইউপিডিএফের ৩ জন। অপর ২ জনের রাজনৈতিক পরিচয় মেলেনি যার মধ্যে ১ জন নারী রয়েছেন। এর মধ্যে ৫২৯ সহিংসতার ঘটনার ৪৪৫ টিই ঘটেছে বিএনপির অন্তর্কোন্দলে ও বিএনপির সাথে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের। এর পাশাপাশি দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার অন্তত ৭৬টি ঘটনায় অন্তত ৫৭ জন নিহত হয়েছেন এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। এসকল হামলায় আওয়ামীলীগের ২০ জন, বিএনপির ২৯ জন, জামায়াতের ১ জন নারী সদস্যসহ ২ জন ও চরমপন্থী দলের ৪ জনসহ ৫৭ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এছাড়াও গত ছয় মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১১০ জনের বেশি গুলিবিদ্ধ, ছয় শতাধিক বাড়ি-ঘর, রাজনৈতিক কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ও যানবাহনে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!