বিএনপির সম্মেলনে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, বোমা বিস্ফোরণ
- মাদারীপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ মে ২০২৫, ০৭:১২ AM , আপডেট: ১০ মে ২০২৫, ১২:৪৩ PM
মাদারীপুরের রাজৈরে বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে উপজেলার হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়নের কালিবাড়ি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপির নেতাকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর জেলার পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলোতে বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য ২২ জন নেতাকর্মীকে দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। তাদেরকে নিয়ে গঠন করা হয়েছে ৭ টি গঠনতন্ত্র মূলক কমিটি। ৬টি কমিটিতে ৩ জন করে ও একটি কমিটিতে ৪ জন রয়েছেন। প্রতিটি কমিটিকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিএনপির কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর মধ্যে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাড. জাফর আলী মিয়া, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বজলু হাওলাদার ও এ্যাড. এইচ এম মিজানুর রহমান। তাদের অনুমতিতে শুক্রবার বিকেলে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আয়োজন করেন ওই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. আবুল কালাম শিকদার।
তারা আরও জানান, তবে ডা. আবুল কালাম শিকদার পুনরায় সভাপতি পদ পেতে ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের কোন নেতাকর্মীকেই সম্মেলনের বিষয়টি জানায়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে সম্মেলনের মাঝেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়ার সাথে স্থানীয় নেতাকর্মীদের বাগ-বিতণ্ডা হয়। পরে জাফরের অনুসারী বিএনপির সভাপতি প্রার্থী আবুল কালাম গ্রুপ ও রাজৈর উপজেলা বিএনপি নেতা আরিফ হাওলাদার গ্রুপের মধ্যে একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। এতে জিয়া পরিষদের কার্যকরী সদস্য মো. জিয়াউর রহমান জিয়া ও আব্বাস শিকদারসহ কয়েকজন আহত হন। পরে কমিটি ঘোষণার জন্য ৭ দিনের সময় নিয়ে সম্মেলন শেষ করেন জেলা বিএনপির নেতারা।
এ বিষয়ে সভাপতি প্রার্থী ডা. আবুল কালাম শিকদার অভিযোগ করে বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক যে কর্মসূচি দিয়েছেন, তা আরিফ হাওলাদার মানতে অস্বীকৃতি জানায়। আগেও তিনি প্রায় ৫০-৬০ জন লোক নিয়ে এসে আমাকে হুমকি দিয়েছিলেন যেন আমি ওই কর্মসূচিতে অংশ না নিই। আমি রাজি না হওয়ায়, সম্মেলনের সময় তিনি আওয়ামী লীগের কিছু লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ঘটনাস্থলে আমাদের গ্রামের জিয়া ও রেজাউল শিকদারও উপস্থিত ছিল। জিয়া উল্টা-পাল্টা কথা বলায় মার খায়। ওই সময় বিএনপির তিনটা গ্রুপ উপস্থিত ছিল।
পাল্টা অভিযোগ করে আরিফ হাওলাদার বলেন, আবুল কালাম শিকদার কবিরাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি। বর্তমানে আলাদা করে হরিদাসদী-মহেন্দ্রদী ইউনিয়ন করা হয়েছে। তিনি পুরোনো লোক হওয়ায় তাকে দায়িত্ব নিয়ে অনুষ্ঠানটি পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিল জেলা কমিটি। কিন্তু তিনি সেটা ঠিক ভাবে পালন করতে পারেনি। বেশিরভাগ নেতা-কর্মীই দাওয়াত পায়নি। এজন্য তারা কালামের উপর ক্ষিপ্ত হয়। পরে এক কথায়-দুই কথায় সংঘর্ষ বাধে।
তিনি আরও বলেন, সে আওয়ামী লীগের লোকজন দাওয়াত দিয়েছে। আর আওয়ামী লীগের লোকজনই ওখানে বোম ফাটিয়েছে পুলিশ ধাওয়া করেছিল কিন্তু ধরতে পারেনি। বিএনপির অনুষ্ঠান পণ্ড করার জন্য আওয়ামী লীগের লোকজন এই কাজ করছে।
বিষয়টি জানতে মাদারীপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জাফর আলী মিয়াকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে রাজৈর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্চয় কুমার ঘোষ বলেন, এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।