ঢাবি ছাত্রীর নগ্ন ছবি পোস্ট করা সেই সাদাত এখন নতুন ছাত্রসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা

মোহাম্মদ মোফাজ্জল সাদাত
মোহাম্মদ মোফাজ্জল সাদাত  © সংগৃহীত

২০২০ সালে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নিজ বিভাগের এক নারী সহপাঠীর ব্যক্তিগত ছবি (নগ্ন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের ওই ছাত্র মোহাম্মদ মোফাজ্জল সাদাত। পরে তাকে রিমান্ডেও নিয়েছিল পুলিশ।

সদ্য ঘোষিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত হয়েছেন তিনি। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলায় জেলে থাকা এমন অপরাধীকে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ঢাবি ছাত্রীর নগ্ন ছবি ফেসবুকে, ছাত্র গ্রেপ্তার

এ বিষয়ে আজ রবিবার (৯ মার্চ) রাতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো। তার মামলার বর্তমান অবস্থা যাচাই করে যদি সে দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

২০২০ সালের মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, করোনার প্রার্দুভাবের শুরুর দিকে মোহাম্মদ মোফাজ্জল সাদাত নামে ঢাবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের ওই ছাত্রের সঙ্গে একই সেশনের এক ছাত্রীর প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। এসময় ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় বিভিন্ন সময়ে ফেসবুকে তাদের মধ্যে চ্যাটিং, ভিডিও ও অডিও কথাবার্তা চলতো।

আরও পড়ুন: ছাত্রীর নগ্ন ছবি ফেসবুকে, ঢাবি ছাত্রের তিন দিনের রিমান্ড

একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠলে ওই ছাত্রীর সরলতার সুযোগ নিয়ে ইমোশনাল কথাবার্তা বলে সাদাত নগ্ন ছবি দেখাতে বলত। ওই ছাত্রী সরল বিশ্বাসে তার এ প্রস্তাবে রাজি হয়ে এসব প্রদান করে। পরে এসব আপত্তিকর ছবি সাদাত তার ফোনে সংগ্রহ করে রেখে দেয়।

এজহারে ওই ছাত্রী আরও উল্লেখ করেন, ওই বছরের ৩১ অক্টোবর রাত ৯টার দিকে আমার এক বন্ধুর আইডিতে মাহমুদ হাসান নামের ফেসবুক আইডি থেকে বেশকিছু নগ্ন ছবি প্রেরণ করে। ঢাবি ছাত্র সাদাত এসব ছবি প্রেরণ করেছে দাবি করে তিনি জানান, এ অবস্থায় আসামি সাদাত এসব ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করে আমার মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে। যাতে আমি সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছি।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী থানায় মামলা দায়ের করলে সাদাতকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি তিন দিনের রিমান্ডে ছিলেন এবং পরবর্তী সময়ে কয়েক বছর কারাগারেও ছিলেন। তবে মামলাটি এখনো চলমান কি না, কিংবা তিনি এখনো নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।  

সম্প্রতি এ ঘটনা জানাজানি হলে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাবির একজন শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যে ব্যক্তি নারীর প্রতি এমন অপরাধ করেছে, সে কিভাবে ছাত্র রাজনীতির একটি সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ পদ পায়? অনতিবিলম্বে মোফাজ্জলকে সংগঠন থেকে সরানো উচিত।’ 


সর্বশেষ সংবাদ