চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের জন্মবার্ষিকী আজ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২২, ১২:২৮ PM , আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২২, ০২:০০ PM
পুরো নাম শেখ মোহাম্মদ সুলতান — যিনি এস এম সুলতান নামে অধিক পরিচিত। চিত্রকর্মে তার অবদান অনস্বীকার্য। আজ বুধবার (১০ আগস্ট) তার জন্মবার্ষিকী। ১৯২৪ সালের এইদিনে নড়াইলের মাসিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এস এম সুলতান। তার পিতা শেখ মোহাম্মদ মেসের আলী ও মাতা মোসা. মেহেরুননেসা বিবি।
বাবা পেশায় ছিলেন রাজমিস্ত্রী। তবে কৃষিকাজই ছিল তার মূল পেশা। শৈশবে পরিবারের সবাই তাকে লাল মিয়া বলে ডাকতো। বিদ্যালয়ে পড়ানোর মতো সামর্থ্য না থাকলেও ১৯২৮ সালে নড়াইলের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুলে তাকে ভর্তি করানো হয়। পাঁচ বছর অধ্যয়নের পর সেই বিদ্যালয়ে ছেড়ে বাড়ি ফিরে বাবার সহযোগী হিসেবে রাজমিস্ত্রির কাজ শুরু করেন সুলতান এবং রাজমিস্ত্রির কাজের ফাঁকে আঁকাআঁকি শুরু করেন।
১০ বছর বয়সে ড. শাম্যপ্রসাদ মুখার্জি নড়াইলে ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল পরিদর্শনে এলে সুলতান তার একটি পেন্সিল স্কেচ আঁকেন এবং এ পেন্সিল স্কেচের মাধ্যমেই শিল্পী হিসেবে সুলতানের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে। শৈশব থেকেই সুলতান তার জীবনের মূল ছন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন, কৃষক এবং কৃষিকাজের মধ্যে। আর এ জন্যই তার চিত্রকর্মের বেশিরভাগই ছিল গ্রামীণ কৃষকদের জীবনযাপন। তবে তার ছবিগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল।
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী আজ।
তাঁর আঁকা ছবিগুলোতে বাঙালি কৃষক ও নারীদের দৈহিকভাবে বলিষ্ঠ দেখানো হত। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ তো অনেক রুগ্ন, কৃশকায়। আমার ছবিতে তাদের বলিষ্ঠ হওয়াটা আমার মনের ব্যাপার। মন থেকে ওদের যেমনভাবে আমি ভালোবাসি সেভাবেই তাদের তুলে ধরার চেষ্টা করেছি...। ওদের বলিষ্ঠ হওয়া উচিৎ।’
সুলতান শুধু শিল্পীই ছিলেন না- তিনি সংগীত ভালোবাসতেন। খুব ভালো বাঁশি বাজাতে পারতেন। তার উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্ম: জমি কর্ষণ-১, জমি কর্ষণ-২ (১৯৮৬, ১৯৮৭), হত্যাযজ্ঞ (১৯৮৭), মাছ কাটা (১৯৮৭), জমি কর্ষণে যাত্রা-১ এবং ২ (১৯৮৭, ১৯৮৯), যাত্রা (১৯৮৭), ধান মাড়াই (১৯৯২), গাঁতায় কৃষক (১৯৭৫), প্রথম বৃক্ষ রোপণ (১৯৭৬), চর দখল (১৯৭৬) পৃথিবীর মানচিত্র।
১৯৮২ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ম্যান অব অ্যাচিভমেন্ট এবং এশিয়া উইক পত্রিকা থেকে ম্যান অব এশিয়া পুরস্কার লাভ করেন তিনি। একই বছর একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্স আর্টিস্ট হিসেবে স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান এস এম সুলতান। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
এসএম সুলতানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নড়াইলে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছে এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- কোরআনখানি, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা প্রতিযোগিতা, দোয়া মাহফিল ও এস এম সুলতান আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধন।