ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক আর নেই
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৫৬ PM
ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না এলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। জানা গেছে, মৃত্যুর আগে তিনি তার মরদেহ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল মেডিকেল কলেজে দান করে গেছেন।
আহমদ রফিকের বিশেষ সহকারী মো. রাসেল এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। বারডেম হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, মৃত ঘোষণা করার সাত মিনিট আগে তার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়।
এর আগে শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় গতকাল বুধবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বারডেম হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। কিডনির সমস্যার পাশাপাশি সম্প্রতি কয়েকবার ‘মাইল্ড স্ট্রোক’-এর শিকার হন তিনি।
এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তবে সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা না থাকায় গত রবিবার তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: ভারতে আসছেন মেসি, দেখা করবেন মোদির সঙ্গেও
আহমদ রফিক নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। ১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেওয়া এই ভাষাসৈনিক ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারান এবং নিঃসন্তান। তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে রয়েছে বিপুলসংখ্যক বই, যা ছাড়া অন্য কোনো উল্লেখযোগ্য সম্পদ নেই।
ভাষা আন্দোলনের অন্যতম প্রাবন্ধিক ইতিহাসবিদ এই লেখক শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। দুই বাংলার রবীন্দ্রচর্চায় তার অবদান অনন্য; কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে তাকে দেওয়া হয়েছে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।
২০১৯ সাল থেকে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে শুরু করলে অস্ত্রোপচার করা হলেও ফল আশানুরূপ হয়নি। ২০২৩ সাল থেকে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন। এর আগেই, ২০২১ সালে পড়ে গিয়ে পা ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে যেতে থাকে। সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনে তার অবদানের জন্য দেশের বুদ্ধিজীবী মহল আহমদ রফিকের উন্নত চিকিৎসা ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।