সেন্ট মার্টিনে ঢাবি শিক্ষার্থীসহ তিনজনের স্বেচ্ছা বাস
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ মে ২০২০, ০৯:৫৩ AM , আপডেট: ০৭ মে ২০২০, ১০:২৩ AM
দেশে করোনাভাইরাসের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এসময়ে মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সেন্ট মার্টিন দ্বীপে স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিনে থাকছেন তিন পর্যটক। গত মার্চে সাতজনের একটি দল অবকাশযাপনে গিয়েছিল দ্বীপটিতে। নির্দিষ্ট সময়ে চারজন ফিরে এলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা আর ছুটির পূর্বাভাস পেয়ে স্বেচ্ছায় থেকে যান বাকিরা।
স্বেচ্ছায় দ্বীপ কোয়ারেন্টিনে থাকা এই তিন পর্যটক হলেন রাজধানীর এনজামুল হক, আরশাদ হোসেন ও সালেহ রেজা। তাঁদের মধ্যে আরশাদ হোসেন পেশায় ব্যবসায়ী, এনজামুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করছেন, সালেহ রেজা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
এই তিনজন এক দিন, দুদিন করে ৪ মে দ্বীপে কাটিয়ে দিলেন ৫০তম দিনটি। তিনজন বলছেন, এই সময়টায় ভিন্ন এক সেন্ট মার্টিন দেখা পেয়েছেন তাঁরা। একটি ভ্রমণ সংগঠনের সদস্য হিসেবে ভিন্ন বয়সী এই তিনজনের পরিচয়, বন্ধুত্ব। তাঁরা বলেন, সেই বন্ধুত্বের সূত্রেই গত ১৫ মার্চ সাতজন ঘুরতে গিয়েছিলেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপে। ২০ মার্চ থেকে করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী ১৯ মার্চ শেষ জাহাজ দ্বীপ ছেড়ে আসে। সে জাহাজে অন্য পর্যটকদের সঙ্গে দলের চারজন ফিরে এলেও থেকে যান তাঁরা তিনজন।
সেন্ট মার্টিন থেকে মুঠোফোনে এনজামুল হক বলেন, ‘আমরা সে সময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম। চিন্তা করে দেখলাম, ঢাকায় কোনো কাজ নেই, অফিসও বন্ধ থাকবে, করোনার প্রকোপে ইতালি বা স্পেনের মতো অবস্থা হয়, তাহলে তো বাসা থেকে বের হতে পারব না। শেষ পর্যন্ত হিসাব মিলিয়ে দেখলাম, দ্বীপে থেকে যাওয়াই ভালো। অন্তত নির্জন দ্বীপ উপভোগ করা যাবে।'
তাঁরা উঠেছিলেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের একটি রিসোর্টে। নির্দিষ্ট সময় পর বিনে পয়সায় সে রিসোর্টেরই একটি কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। পর্যটক না থাকায় রিসোর্টের দুজন কর্মীর সঙ্গে এক চুলায় খাবার রান্না করে খাচ্ছেন।
সালেহ রেজা বলেন, আমাদের রুমটা সৈকতের পাশে। ঘুমাতে যাই ঢেউয়ের শব্দ শুনে আবার ঘুম থেকে জেগে উঠি ঢেউয়ের শব্দে। রান্নাও নিজেরা করি। প্রতিদিন বিকেল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সৈকতে বসে কাটিয়ে দিই। প্রতিদিন নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। মনে হচ্ছে এই দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে গেছি।
কবে ফিরে আসছেন জানতে চাইলে এনজামুল হক বলেন, করোনা পরিস্থিতি কোন দিন স্বাভাবিক হবে আর কোন দিন ফেরা হবে জানি না। তবে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে থেকে মনে হচ্ছে, জীবনের সোনালি দিন কাটাচ্ছি আমরা।
দেশজুড়ে করোনার প্রকোপ যখন বাড়ছে, তখন অনেকটা নিরাপদেই আছেন সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বাসিন্দারা। এ তথ্য দিতে গিয়ে দলটির সদস্যরা বলছিলেন, ২০ মার্চ থেকে বাইরের কাউকে দ্বীপে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা কড়াকড়িভাবে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাই দ্বীপের বাসিন্দাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কিছুটা কম।