বই-খাতা ছেড়ে ২০ বছর বয়সেই বাস চালাচ্ছেন তরুণী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২০, ০১:১৭ PM , আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০, ০১:৩৫ PM
দুর্ঘটনায় পা হারিয়েছেন বাবা, তাই বই-খাতা ছেড়ে ২০ বছর বয়সেই হাতে ধরেছেন বাসের স্টিয়ারিং। প্রতিদিন নিয়মিত সকাল ৭ টায় ঘুম থেকে উঠে ঘরের কাজে মাকে সাহায্য করেই বেড়িয়ে পড়েন বাস নিয়ে। সারাদিনে ভারতের এসপ্ল্যানেড-বরানগর সফর সেরে রাতে ফেরেন বাড়িতে। প্রথমদিকে অনেকেরই মনে প্রশ্ন উঠেছিল আদৌ কল্পনা পারবেন তো? স্বাভাবিকভাবেই পরিবার ছাড়া কাউকেই পাশেও পাননি তিনি।
বাবা, মা, দিদি ও দুই দাদাকে নিয়ে সংসার বরানগরের কল্পনা মণ্ডলের। পরিবারের সব থেকে ছোট সদস্য হওয়া সত্ত্বেও সংসারের দায়িত্ব হাসিমুখে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি। তাই এখন পরিজন থেকে প্রতিবেশী সকলেই কল্পনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। শুধু তাঁরাই নন, সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে কোটি কোটি তরুণীর অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন কল্পনা।
এ প্রসঙ্গে কল্পনার বাবা সুভাষ মণ্ডল জানিয়েছেন, এককালে চকলেট কারখানায় কাজ করলেও আর্থিক অনটনের কারণে বন্ধুর সহযোগিতায় বাস চালাতে শুরু করেন তিনি। তখন থেকে বাবার সঙ্গে থেকে মাঝেমধ্যে গোটা বিষয়টি মন দিয়ে দেখত কল্পনা। তবে তা যে কোনওদিন এভাবে কাজে লাগবে তা ভাবতেও পারেননি কেউ। এরপর বছর দুয়েক আগে দুর্ঘটনায় পায়ে চোট পান সুভাষবাবু। সেই থেকে বন্ধ তাঁর বাস চালানো। প্রবল অনটনে স্টিয়ারিং হাতে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কল্পনা।
প্রথম থেকে বাবা পাশে থাকলেও বাস পেতে প্রবল সমস্যা ভোগ করতে হয়েছিল তরুণীকে। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অনেক বাস মালিকই। অবশেষে মেলে বাস। যাত্রী নিয়ে এসপ্ল্যানেড-বরানগর রুটে যাত্রা শুরু করেন কল্পনা। এখনতো একডাকে সবাই চেনে তাঁকে। পরিবারের জন্য ছোটো মেয়ে যা করছে, তাতে আপ্লুত সুভাষবাবু। কল্পনাই তাঁর গর্ব, দৃপ্ত কন্ঠে জানান তিনি।