ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল যুক্তরাজ্যসহ ৩ দেশ
- টিডিসি ওর্য়াল্ড
- প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২৬ PM , আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৯ PM
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এ সিদ্ধান্তের কথা তিন দেশই প্রকাশ করেছে। আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। দুই রাষ্ট্র সমাধানের গতি ফেরাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে খবরে বলা হয়।
যৌত বিবৃতিতে বলা হয়, আজ রবিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর, অস্ট্রেলিয়ার কমনওয়েলথ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিল। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ ও দীর্ঘদিনের নিজস্ব রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষাকে স্বীকৃতি জানালো।
আজকের এই স্বীকৃতির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সমন্বিত আন্তর্জাতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুই রাষ্ট্র সমাধানের নতুন গতি সঞ্চার করতে চায়; যার সূচনা হবে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সংঘটিত নৃশংসতায় নেওয়া জিম্মিদের মুক্তির মাধ্যমে। আজকের এই স্বীকৃতি অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে যে, দুই রাষ্ট্র সমাধানই সবসময় ছিল ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার একমাত্র পথ।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জন্য স্পষ্ট শর্ত নির্ধারণ করেছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট পুনরায় ইসরায়েলের অস্তিত্বের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং অস্ট্রেলিয়াকে সরাসরি আশ্বাস দিয়েছেন যে, তারা গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজন করবে এবং আর্থিক খাত, শাসনব্যবস্থা ও শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যকর করবে। সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের কোনো ভূমিকা ফিলিস্তিনে থাকতে পারবে না। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ সংস্কার কার্যক্রমে অগ্রগতি ঘটালে, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন ও দূতাবাস খোলাসহ পরবর্তী পদক্ষেপগুলো বিবেচনা করা হবে।
ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় একটি বিশ্বাসযোগ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করেছে, যা গাজা পুনর্গঠন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এই কাজের জন্য আরব লীগভুক্ত দেশগুলোর নেতৃত্ব এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অস্ট্রেলিয়া আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে; আজকের স্বীকৃতিকে ভিত্তি করে মধ্যপ্রাচ্যকে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তার দিকে আরও কাছাকাছি নিয়ে যেতেও কাজ করবে। এটিই সমগ্র মানবজাতির আশা ও অধিকার।
এদিকে যুক্তরাজ্যের এই অবস্থান পরিবর্তনের তীব্র সমালোচনা করেছে ইসরায়েল। এ নিয়ে সমালোচনা করেছেন গাজায় জিম্মি থাকা ইসরায়েলিদের পরিবার এবং দেশটির রক্ষণশীল রাজনীতিকরাও। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এর আগে বলেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলে তা আসলে ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত’ করার শামিল হবে।
এর আগে স্টারমার প্রশাসন জুলাইয়ে জানিয়েছিল, সেপ্টেম্বর মাসেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা আসবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত মানতে অস্বীকৃতি জানায় এবং দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের মাধ্যমে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ না নেয়, তবে যুক্তরাজ্য তাদের অবস্থান পরিবর্তন করবে এবং ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।
শুধু যুক্তরাজ্য নয়, ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, পর্তুগাল ও লুক্সেমবার্গও ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। দেশগুলো সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছে।