ভারতে রাস্তায় প্রকাশ্যে নারীর হিজাব খুলে হেনস্তা

  © ভিডিও থেকে সংগৃহীত

ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরে রাস্তায় প্রকাশ্যে এক মুসলিম নারীর হিজাব জোরপূর্বক খুলে দেওয়ার ঘটনা দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একদল যুবক ওই নারী ও তার সঙ্গে থাকা পুরুষকে ঘিরে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছে, গালিগালাজ করছে এবং এক পর্যায়ে এক ব্যক্তি জোর করে তার হিজাব খুলে নিচ্ছে।

গত সোমবার (১৫ এপ্রিল) সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নিন্দার ঝড় ওঠে ভার্চুয়াল দুনিয়ায়। এরপরই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০ বছর বয়সী ভুক্তভোগী নারী ফারহিন এবং শচীন নামের এক ব্যক্তি উৎকর্ষ স্মল ফাইন্যান্স নামক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করেন। ঘটনার দিন, অর্থাৎ ১২ এপ্রিল বিকেল ৪টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে তাঁরা ঋণের কিস্তি আদায় শেষে মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন। পথে মুজাফফরনগরের খালপাড় এলাকার দরজি ওয়ালি গলিতে পৌঁছালে ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল তাদের পথরোধ করে।

সিটি সার্কেল অফিসার (সিও) রাজু কুমার সাও জানান, স্থানীয় কিছু লোক এ সময় তাদের ঘিরে ফেলে। এরপর তারা ওই নারী ও পুরুষকে গালিগালাজ ও মারধর করে। এক পর্যায়ে একজন ব্যক্তি ফারহিনের মাথায় থাকা হিজাবটি জোর করে টেনে খুলে ফেলেন। পুরো ঘটনাটি একজন পথচারী মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন, যা পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়।

ওই ভিডিও ভাইরালের পরপরই মুজাফফরনগর পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং ভুক্তভোগীদের নিরাপদে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ফারহিন নিজে থানায় গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরই ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়।

সিও রাজু কুমার সাও আরও বলেন, এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে আরও যারা জড়িত ছিল তাদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।” তিনি জানান, ভুক্তভোগীরা একটি স্বীকৃত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত কর্মী, এবং তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছিলেন মাত্র।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং নারীর মর্যাদা রক্ষায় ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। ফারহিনের ওপর প্রকাশ্যে এই হামলা ও অপমানের ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে সংখ্যালঘুদের মধ্যে।

এ ঘটনায় দ্রুত তদন্ত ও কঠোর বিচার দাবি করেছেন দেশটির মানবাধিকারকর্মীরা। নারী ও ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে কাউকে এভাবে প্রকাশ্যে হেনস্তার ঘটনা ভারতীয় সমাজব্যবস্থার জন্য একটি গভীর সংকেত বলেও মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence