শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: অবদান, প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

লেখক ও অপরাজেয় বাংলা
লেখক ও অপরাজেয় বাংলা  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন গোটা পূর্ববঙ্গ ও আসামের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত। ১৯২০ সালের পূর্বে এই ভূখণ্ডে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। অজস্র ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে ১৯২১ সালে স্বপ্ন থেকে বাস্তবে রূপ নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১লা জুলাই থেকে শুরু হয় শিক্ষা কার্যক্রম। বঙ্গভঙ্গের সময় থেকে পূর্ববঙ্গে মুসলিম সমাজে যে নবজাগরণ শুরু হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তারই ফসল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো পূর্ববঙ্গে একটা মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজ সৃষ্টি করা। এই মুসলিম মধ্যবিত্ত সমাজই পরবর্তীতে পূর্ববঙ্গের সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনে নেতৃত্ব দান করে।

১৯০৫ সালের ১৬ই অক্টোবর বঙ্গভঙ্গ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বঙ্গকে দুইভাগে ভাগ করা হয়। পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ নিয়ে গঠিত এই ভূখণ্ড বিভিন্ন দিক থেকে বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রে বেশি লাভবান হয়। ঢাকা পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের রাজধানীর মর্যাদা লাভ করে। এ সময় পূর্ববঙ্গে শিক্ষার যে জোয়ার এসেছিল তাতে করে ঢাকাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছিল সময়ের দাবি। কিন্তু ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর বঙ্গভঙ্গ রদের মাধ্যমে সেই সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। ১৯১২ সালের ২১শে জানুয়ারি ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকা সফরে আসলে ঢাকার কিছু নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি তার সাথে সাক্ষাৎ করে বঙ্গভঙ্গ রদের কারণে তাদের ক্ষতির কথা জানান।

এই ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে হার্ডিঞ্জ ঘোষণা দেন যে, তিনি সরকারের কাছে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সুপারিশ করবেন। ১৯১২ সালের মে মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে নাথান কমিশন গঠন করা হয়। এ কমিটির ২৫টি সাব-কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ভারত সরকার প্রস্তাবিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রূপরেখা স্থির করে। ১৯১৩ সালে নাথান কমিটির রিপোর্ট অনুমোদিত হয়। কিন্তু, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পথে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। ১৯১৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর লর্ড চেমস্‌ফোর্ড কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাসমূহ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন। সেই কমিশনের উপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে পরামর্শ দেবার দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

এই কমিশনের প্রধান ছিলেন মাইকেল স্যাডলার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন (স্যাডলার কমিশন) ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তেরোটি সুপারিশ করে এবং কিছু রদবদলসহ তা ১৯২০ সালের ভারতীয় আইন সভায় গৃহীত হয়। ভারতের তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল ১৯২০ সালের ২৩শে মার্চ তাতে সম্মতি প্রদান করেন। স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য ছিলেন লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক রেজিস্টার পি. জে. হার্টগ। তিনি ১৯২০ সালের ১লা ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ১৯২১ সালের ১লা জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবেই কার্যক্রম শুরু করে।

যাত্রাপথে উত্থান-পতন থাকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও তা ছিল কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকেনি। বাংলাদেশকে একটা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচলানার সাথে সুনিবিড় যোগ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের।

মাতৃভাষা বাংলার সম্মান মর্যাদা রক্ষার্থে সর্বপ্রথম ময়দানে নেমেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগে বাংলা সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী অঞ্চল ছিল যা পাকিস্তানের প্রায় ২৪ বছরের শোষণ, নির্যাতনে তা ম্লান হয়ে যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধিকারের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের পরতে পরতে মিশে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অবদান।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ভূমিকা রাখে বিভিন্ন আন্দোলনকে সংগঠিত করতে।১৯৪৮ সালের মার্চ মাসে কার্জন হল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসমাজ তৎক্ষণাৎ প্রতিবাদ জানায়।

ভাষা আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপদান করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে।১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজপথে মিছিল বের করেছিল তৎকালীন ছাত্রসমাজ। পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়ে তারা রক্ষা করেছিল মাতৃভাষার সম্মান।সেদিন পুলিশের গুলিতে আত্নবিসর্জনকারী ভাষা শহীদ আবুল বরকত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ও প্রতিবাদী শিক্ষার্থী।এই আন্দোলন ছিল বাঙালি রেনেসাঁ বা নবজাগরণের প্রথম আন্দোলন।

শুধু ভাষা আন্দোলন নয়, বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলনেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এসেছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা , কর্মচারীসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

এছাড়াও ১৯৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬এর ছয় দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের ভূমিকা সবার চোখে পড়ার মতো। সংগ্রামী মনোভাবের কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রথম থেকেই ছিলেন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর চক্ষুশূল। ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি যোগসূত্র থাকায় এই বিশ্ববিদ্যালয় পাক-বাহিনীর প্রথম টার্গেটে পরিণত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হয়। মার্চ মাসজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। সে কারণে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের ভয়াল কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে জঘণ্যতম আক্রমণ চালানো হয়। স্বাধীনতাকামী ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর জীবন কেড়ে নিয়ে জাতিকে পঙ্গু করে দেয়ার পায়তারা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় ধরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ছাত্রদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ মুক্তিযুদ্ধেও যোগদান করেন। স্বাধীনতার দু’দিন আগে ১৪ই ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইশজন শিক্ষককে নির্মমভাবে হত্যা করে এ জাতির এক অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে হানাদার বাহিনী।

কাজেই বলা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ বিনির্মাণের এক প্রধানতম কারিগর।

স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমাদেরকে লড়তে হয়েছিলো ৯ মাস। আর সেই স্বাধীন দেশেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে দীর্ঘ ৯টি বছর।  তাকে নিয়ে অনেক ঘটন-অঘটনই এ প্রজন্মের অজানা। এরমধ্যে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি হচ্ছে এরশাদ বিরোধী আন্দোলন বা এরশাদ সরকারের পতন যা স্বৈরাচারী সরকারের পতন নামে পরিচিত।

এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জেহাদ পুলিশের গুলিতে নিহত হলে ছাত্র সমাজ আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তখন থেকেই স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তীব্র হয় । পরবর্তীতে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়। স্বৈরাচারী সরকারের পতনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সমাজের ভূমিকা স্পষ্টতই।

অর্থাৎ, ভাষা-পতাকা-দেশ-গণতন্ত্র,  এই চারটি সুবিশাল অর্জনের সবচেয়ে বড় সারথীর নাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশা:
শিক্ষার গুণগত মান ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং গবেষণা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করেছে। মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা প্রকল্প এবং মৌলিক গ্রন্থ রচনা সহ জার্নালসমূহ আধুনিকায়ন করেছে।

প্রতি বছর কয়েক হাজারো শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, এর ফলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিয়ে কর্তৃপক্ষকে প্রতি বছরই সমস্যায় পড়তে হয়। তবে এ সমস্যা থেকে উত্তরণের পথে যথেষ্ট অগ্রগতিও চোখে পড়ে। নতুন হলসহ আবাসিক হলগুলোর ভবন সম্প্রসারণে একটি মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করছে। গত এক দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের সেশনজটের মুখোমুখি হতে হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডে আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছাতে হলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাইকেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে, গবেষণাকাজে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে এবং এ খাতে বাজেট বৃদ্ধিরও প্রয়োজন রয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্বাভাবিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তা থেকে জোর গলায় বলাই যায়, এই সমস্যাগুলোও খুব দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়টি কাটিয়ে উঠবে এবং নিজের গৌরবকে করবে আরও সুসংহত।

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমসমূহ:
১) শিক্ষার গুণগত মান ও পরিবেশ উন্নয়ন এবং গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণের লক্ষ্যে Dhaka University Master Plan প্রণয়ন।

২) মৌলিক ও প্রায়োগিক গবেষণা প্রকল্প এবং মৌলিক গ্রন্থ রচনাসহ জার্নালসমূহ আধুনিকায়ণ ও শতবর্ষের উপর বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ।

৩) নিম্নোক্ত শিরোনামে দু’টি মৌলিক গ্রন্থ প্রকাশ :

(ক) History of Dhaka University, (সম্পাদক), অধ্যাপক ড. রতন লাল চক্রবর্ত্তী

(খ) The Role of Dhaka University in Making and Shaping Bangladesh, (সম্পাদক), প্রফেসর এমিরিটাস ড. এ কে আজাদ চৌধুরী

৪) বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি সংযোজনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারসমূহ আধুনিকায়ন।

৫) দেশে ও বিদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপ্রতিষ্ঠিত অ্যালামনাই এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের নিয়ে ঢাকায় নিম্নোক্ত শিরোনামে ৬টি আন্তর্জাতিক সেমিনার (ওয়েবিনার) আয়োজন করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রাক্তন-শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে উক্ত সেমিনার উদ্বোধন করতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।

৬) শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে ১লা জুলাই ২০২১ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মাননীয় চ্যান্সেলর জনাব মো. আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উক্ত অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করতে সানুগ্রহ সম্মতি প্রদান করবেন বলে প্রত্যাশা করছি।

৭) বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের ভাবনা এবং খ্যাতিমান পণ্ডিত, গবেষক ও বিশেষ করে যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পারস্পরিক সহযোগিতামূলক চুক্তি ও সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে ১২-১৪ জুলাই ২০২১ লন্ডনে একটি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করা হবে।

৮) মল চত্বরের ল্যান্ডস্কেপিংসহ একটি Centenary Monument তৈরি করা হবে।

৯) শতবর্ষ উপলক্ষে বিশেষ স্যুভিনিয়র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তথ্যচিত্র তৈরি করা হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকশপে স্যুভিনিয়র কর্নার সংযোজিত হবে।

১০) সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান (Cultural Event) আয়োজন করা হবে।

১১) ‘ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সহযোগিতা’ ও ‘গবেষণা মেলা’ আয়োজন; নভেম্বর-ডিসেম্বর ২০২১।

১২) ‘শতবর্ষের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: অর্জন ও প্রত্যাশা’ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের রচনা প্রতিযোগিতা ও সেরাদের পুরস্কৃতকরণ (শীর্ষ ১০০ জনকে পুরস্কৃত করা হবে)।

১৩) শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অ্যালামনাইদের স্বরচিত কবিতা নিয়ে কবিতাগ্রন্থ প্রকাশ করা হবে।

১৪) শিক্ষার্থীদের ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতা আয়োজন ও সেরাদের পুরস্কৃতকরণ।

এসব কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হলেও এই মহামারি পরিস্থিতিতে তা আদৌ সম্ভব কি না তা বলা মুশকিল।

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান, অর্জন এবং প্রাপ্তির খাতা এতই বিশাল যে, সবকিছু বলে শেষ করা যাবে না। ১লা জুলাই ২০২১, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‍‍‌‌‌‌‌"শততম জন্মদিন" যা অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালনের যে কথা ছিল। তা হয়ত বৈশ্বিক মহামারী করোনার জন্য ব্যাহত হবে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যুগে যুগে মানবতার সেবায়, ন্যায্য অধিকার আদায়ে, জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে যে অবদান রেখেছে তার ধারা অব্যাহত থাকবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

লেখক: চেয়ারম্যান, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কোষাধ্যক্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি


সর্বশেষ সংবাদ