প্রেম-ভালোবাসা-বিয়ে

  © সংগৃহীত

প্রেম ভালোবাসা আদিকালে ছিল অনন্তকাল থাকবে। প্রেমে পড়েনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে এর ধরনটা অনেক পরিবর্তন হয়েছে।

বর্তমান সময়ের প্রেম বড়োই ঠুনকো হয়ে গেছে। এর কোনো গভীরতাই নেই। নেই কোনো আকার। আকার পাওয়ার আগেই তা শেষ হয়ে যায় বেশির ভাগ সময়। সামান্য কারণেই তা শেষ হয়ে যায়। একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে ধরাটা নিয়ম হয়ে গেছে। প্রকৃতি শূন্যস্থান পছন্দ করে না। তাই হয়তো তা পূর্ণতা পায়।

বর্তমান প্রজন্ম এখন আর প্রেমে পড়ে না। তারা ক্রাস খায়! এ ক্রাস তারা টিচারকে দেখে যেমন খায়। বন্ধুর মাকে দেখেও খেতে পারে! কোনো সমস্যা নেই তাতে। তারা দেখেই যে কোনো সময় ক্রাস (প্রেমে) পড়ে যে কারুরই। সে ক্লাসমেট হোক বা ছোটো। সবচাইতে অবাক করা বিষয়টা হলো ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে আর মেয়ে যখন বলে তাদের জিএফ, বিএফ আছে! খুবই আশ্চর্য হই এ বিষয়টা জানার পর।

ডিজিটাল প্রজন্মের কাছে হয়তো তা স্বাভাবিক কিন্তু আমাদের জন্য তা অবাক হওয়ার বিষয় বটে। তারা এ সম্পর্কের নতুন নাম দিয়েছে জিএফ/বিএফ। এখন তারা গর্ব করে বলে আমার এক্স জিএফ ছিল ব্লা.. ব্লা..ব্লা!! আমার বর্তমান জিএফ বাহ্..বাহ্!! এর নেক্সট জিএফ হবে?? ওয়াও.. ওয়াও.. ওয়াও!!

কেউ কেউ আবার বলে আমার বিএফ ছেড়ে যাওয়ার পর আমার বেস্ট ফ্রেন্ড... আমাকে এত সাপোর্ট দিয়েছে তাই তাকে ভোলা আমার জন্য সহজ হয়েছে!! সেই এখন আমার বর্তমান বিএফ! আহা প্রেম! দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া প্রেমের ক্ষেত্রেও বইছে...!

যে মেয়েটি ছেলেটির জন্মদিন মনে রাখতে পারেনি কেন এই অপরাধে তাদের সম্পর্কের ইতিটানে বা (ব্রেক আপ) করে, যে মেয়েটি বিয়ের পর তার জীবনসঙ্গীর বিয়ে বার্ষিকী মনে রাখতে পারেনি কেন সেই ভুলে তাকে শাস্তি পেতে হয়। পরে তাকে ছেড়ে চলে যেতে? সেই ছেলেটিই আবার যখন তার কর্মজীবী বউকে কলিগের সঙ্গে আড্ডা দিতে দেখে তখন সে মুচকি হাসি দিয়ে তাদের সঙ্গে পরিচিত হয়। বাহ্ দারুণ!

একেই বলে ‘ভালোবাসা’! বিয়ে এমন একটি জাদুরকাঠি যার ছোঁয়ায় মানুষ পালটে যায়। ভালোবাসা আর মায়া মানুষকে আটকে ফেলে। মন চাইলেই ছেড়ে যাওয়া যায় না।

তখন আর বলা যায় না ‘আমিতো ভালা না ভালা লইয়াই থাইকো’। তখন বলতে হয় আমি ভালা না আমারে লইয়াই থাইকো। যেটুকু খারাপ আছে শুধরাইয়া লইয়ো। ১০০% ভালো আসলে জগতে কেউই না, আমিও না, সেও না। দুটি ভিন্ন জায়গায় বেড়ে ওঠা দুই জন মানুষ যখন একই ছাদের নিচে বসবাস করে সমস্যা হতেই পারে। মানিয়ে নেওয়া আর মেনে নেওয়ার আরেক নাম বিয়ের পরের জীবন। যে যত বেশি মেনে নিতে বা মানিয়ে নিতে পারবে সেই জগতে সুখী মানুষের তালিকায় থাকে। এ সুখী মানুষ হওয়ার পেছনে যে সেই স্বামী বা স্ত্রীর কতটা যুদ্ধ করতে হয় নিজের সঙ্গে তা তো কেউই দেখে না। ভালোবাসা নামক মায়াজাল তখন তাদের চারদিকে জড়িয়ে থাকে। তবে কয়জন পারে সেই মায়াজালে নিজেকে বন্দি করে রাখতে?

শেষ বলে যে একটা কথা আছে! ধৈর্যেরও তো সীমা থাকে...! জীবন চলে হয়তো জীবনের নিয়মে। কিন্তু কষ্টগুলো থাকে সবার আড়ালে।

বর্তমান সময়ে ডিভোর্সের হার যতটা বেড়েছে আগে এমনটা ছিল না। এখনকার জেনারেশনের ধৈর্য এতটা কম যে তারা অল্পতেই হতাশ হয়ে পড়ে। হঠাত্ করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে সংসার না করার। প্রথম প্রেম বলে এখন আর কিছু নেই সবগুলোই প্রথম এবং একাধিক সম্পর্কেও তারা যখন জড়িয়ে যায়, তখন সেটাও হয় প্রথম কিভাবে ব্যাপারটা সম্ভব!

প্রেম, ভালোবাসা, বিয়ে জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তবে তাদের অনুভব করতে হয় ভিন্ন ভিন্নভাবে। নিজের মতো করে। নিজের অনুভবে তা মিশে থাকে। সুখ আর দুঃখের সঙ্গে!!

n লেখক :সাবেক শিক্ষার্থী, নোয়াখালী সরকারি


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence