বেসরকারিতে অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগ এনটিআরসিএর মাধ্যমে

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও এনটিআরসিএর লোগো
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ও এনটিআরসিএর লোগো  © ফাইল ফটো

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে। এজন্য এনটিআরসিএর বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করতে হবে।

গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক কর্মশালায় এ পরামর্শ দিয়েছেন অধিকাংশ কর্মকর্তারা।

কর্মাশালা সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম দূর করতে অধিকাংশ কর্মকর্তা এনটিআরসিএর মাধ্যমে এই পদগুলোতে নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছেন। এটি বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত বিদ্যমান বিধি অনুযায়ী নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। একই সাথে বিদ্যমান বিধি সংশোধনের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

ওই সূত্র আরো জানায়, এনটিআরসিএর বিদ্যমান আইনে অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগ সম্ভব নয়। বিদ্যমান আইন সংশোধন করে এই পদে নিয়োগ দিতে হবে। আইন সংশোধনের আগ পর্যন্ত কমিটির মাধ্যমে নিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মশালায় উপস্থিত মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, সহকারী শিক্ষকদের ন্যায় অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ এনটিআরসিএর মাধ্যমে হবে। এজন্য আইন সংশোধন করতে হবে। খুব দ্রুত অন্য আরেকটি কর্মশালার মাধ্যমে এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, গতকালকের সভায় আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এনটিআরসিএর মাধ্যমে অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য আইন সংশোধন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, স্বচ্ছতার সাথে অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে আমরা বদ্ধ পরিকর। এ বিষয়ে পরবর্তীতে আরো সভা হবে। সভায় সবার মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ হয় বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কতৃর্পক্ষের (এনটিআরসিএ) অধীন কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মাধ্যমে হয়। এর ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ প্রায় নেই। কিন্তু স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি এখনো পরিচালনা কমিটির হাতে রয়ে যাওয়ায় এসব পদে নিয়োগে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘুষ দিয়ে নিয়োগ পেতে হয়।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগে সাড়ে ৩ লাখ থেকে শুরু করে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়মবহির্ভূতভাবে দিতে হয়। এ টাকা দিতে হয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও পরিচালনা কমিটিকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় এসব পদে নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ আছে। এর ফলে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি চরম হয়রানির শিকার হতে হয়।

নিয়োগ প্রার্থীদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়াসহ স্কুলে লেখাপড়ার মান বজায় রাখা, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন, স্থানীয়দের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে যোগ্য ও দক্ষদের বাছাই করার লক্ষ্যে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে চায় সরকার।


সর্বশেষ সংবাদ