কবে থেকে মেয়েরা টিপ পরা শুরু করে?

কপালে টিপ
কপালে টিপ   © প্রতীকী ছবি

টিপের ইতিহাস আজকের নয়। বেশ পুরোনো। সহজাত প্রবৃত্তি হলো- মেয়েরা সর্বদাই নিজেকে ভিন্ন ভিন্ন উপকরণে সাঁজাতে পছন্দ করেন। কখনো ঠোঁটে মৃদু লিপস্টিক, চোখে হালকা কাজল। হাতে কাঁচের চুরি। তবে মেয়েদের নজর কাড়ে টিপ। টিপ সাঁজার উপকরণগুলো আকর্ষণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। সাজগোজের পরিপূর্ণতায় টিপের জুড়ি নেই। তবে সাজসজ্জায় টিপ পরার প্রচলন কিভাবে এসেছে?

হিন্দু বিবাহিতা নারীদেরকে আলাদা করে চেনার জন্য- শাঁখা, খারু, পলার সঙ্গে তাদের সিঁদুর পরানো হতো। সিঁথিতে সিঁদুর পরার পাশাপাশি তারা কপালে সিঁদুরেরই লাল টিপ পড়তো। ক্রমেই কসমেটিক কোম্পানিগুলো টিপ আবিষ্কার করেন। এরপর থেকে হিন্দু বিবাহিত মহিলারা কপালে সিঁদুর পরার কঠিন কার্যের পরিবর্তে লাল টিপ কিনে পরা শুরু করেন।

এই উপমহাদেশের টিপের ইতিহাস বেশ পুরানো। মানবসভ্যতায় বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সৌন্দর্য ভাবনার শুরু হয়। এজন্য শুধুমাত্র নারীরাই নয় পুরুষেরাও প্রসাধন এবং সাজে যত্নশীল ছিলেন। পুরুষেরা লম্বা চুল, কোঁকড়ানো চুলে সুগন্ধি তেল মাখাতো। নখ রাঙাত পুরুষেরা।

উপমহাদেশের ভারত, বাংলাদেশ, নেপালসহ শ্রীলংকা, মৌরিতানিয়া, থাইল্যান্ডেও টিপ প্রচলিত হয়েছে। বেশ কিছু দেশে টিপকে বলা হল বিন্দি। যার আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায় ফোঁটা । ঋকবেদেও টিপের উল্লেখ রয়েছে, এ থেকে বোঝা যায় প্রায় ৫০০০ হাজার বছর ধরে টিপের প্রচলন।

ষাট সত্তরের দশকের কিংবা এরও আগে সাদাকালো সিনেমাগুলোয় স্লিভলেস ব্লাউজ, বড় খোঁপার সঙ্গে কপালের ভ্রু’র বেশ কিছুটা ওপরে মাঝারি কিংবা ছোট্ট টিপ পরতো। তবে ধীরেধীরে তাতেও আকার এবং আকৃতিতে টিপ নিয়ে পরিবর্তন এসেছে।

আরও পড়ুন : বাড়ছে বিসিএস প্রীতি, বদলে যাচ্ছে পেশা

ইসলাম ধর্মেও টিপের ইতিহাস রয়েছে। তাফসীরে মা-রেফুল কোরআন, হযরত ইব্রাহিম (আ.) মূলগ্রন্থ থেকে এই ইতিহাস জানা যায়। এই মূলগ্রন্থ থেকে জানা যায়, হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামকে আগুনে পুড়িয়ে মারতে নমরুদ একটি ১৮ মাইলের বিশাল অগ্নিকুণ্ড নির্মাণ করেন।

যা এত বড় ও ভয়াবহ উত্তপ্ত ছিল যে, কোনো মানুষের পক্ষে হযরত ইব্রাহীমকে (আ.) সেখানে নিয়ে নিক্ষেপ করা সম্ভব হল না। অবশেষে একটি চরক বানানো হয়। যার মাধ্যমে হযরত ইব্রাহীমকে (আ.) ছুড়ে আগুনে নিক্ষেপ করা যাবে। কিন্তু মহান আল্লাহ তা’আলার নির্দেশে রহমতের ফেরেশতারা চরকের একপাশে ভর করে থাকায় চরক ঘুরানো যাচ্ছিল না।

এছাড়া ছালাবী আদিগ্রন্থ, কাসাসুল আম্বিয়া, পৃষ্ঠা: ৮১, আদি ইসলামী ইতিহাস, ইবনে কাসীরে বলা হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে শয়তান নমরুদকে কুবুদ্ধি দেয়। শয়তানের পরামর্শ দেয়- নমরুদ যেন কিছু নগ্ন মেয়ে (পতিতা) এনে চরকের সামনে বসিয়ে দেয়, কারণ ফেরেশতারা এই অবস্থায় থাকতে পারবে না। তাই করা হল। এতে ফেরেশতারা চলে গেল। এরপর তারা হযরত ইব্রাহীমকে (আ.) আগুনে নিক্ষেপ করতে সক্ষম হলেন।

পরবর্তীতে ওই মেয়েগুলোকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দান করা হল এবং তাদের মাথায় এক ধরনের তীলক পরানো হল। যেটি বর্তমানে আমাদের কাছে টিপ নামে পরিচিত।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence