শেখ মুজিব মানুষকে উত্তেজিত করে ‘পাইপ’ টানতে টানতে পাকিস্তানে চলে গেছিলেন: আলাল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৬ PM , আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:০৪ PM
১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান জনগণকে উত্তেজিত করে চুরুটে পাইপ টানতে টানতে পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। সে সময়ে ‘শহীদ’ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
আজ বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে আয়োজিত ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান আলোচনা করতে গিয়ে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, শেখ মুজিব বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে উত্তেজিত করেছেন। এরপর চুরুটে পাইপ টানতে টানতে পাকিস্তানে চলে গেলেন। নিজের পরিবারকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রেখে যান। শেখ হাসিনার ছেলে জয়ের জন্ম হয়েছে সিএমএইচে। শেখ মুজিবের পরিবারকে ভাতা দেওয়া হত। পরবর্তীতেও শেখ হাসিনাও জাতিকে ভালো কিছু দেওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো কাজ করেননি।
আরও পড়ুন: বিজয় দিবসে গুণীজন সম্মাননা পেলেন সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু
গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও গণহত্যার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমানের প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিলেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। বিএনপি নেতা বলেন, ১২০০ কোটি টাকা খরচ করে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করা হয়। অথচ এটি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই নামকরণ হয়েছিল।
তিনি বলেন, জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংক্ষিপ্ত নাম হিসেবে ‘জিয়া’ (Zia International Airport) ব্যবহার হত, যা পাসপোর্টে সিল থাকত। পরবর্তীতে জিঘাংসার বশবর্তী হয়ে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। হযরত শাহজালালের নামকরণে কোনো ভক্তি-শ্রদ্ধা ছিল না। বরং ‘জিয়া’র পরিবর্তে সংক্ষিপ্ত রূপ যেন ‘হাসিনা’ (Hazrat Shahjalal International Airport) হয়, এই হীন স্বার্থে হযরত শাহজালালের নামে নামকরণ করা হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ৯১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এক দিনের জন্যও শান্তিতে থাকতে দেবেন না। বেগম জিয়াকে শান্তিতে থাকতে দেনও নাই। অথচ জিয়াউর রহমানই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করেছিলেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীকেও পুনরুজ্জীবিত করেছিলেন। অথচ আপনারা আজকে যা মন চায় তা বলছেন আবার ক্ষমা চাচ্ছেন। আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে তো লাভ নেই।
আরও পড়ুন: আমাকে বিদায় দিতে দয়া করে কেউ এয়ারপোর্টে যাবেন না: তারেক রহমান
আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দু-একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জয় লাভ করে যদি সারা বাংলাদেশে জয় লাভ করা যেত, তাহলে মাহমুদুর রহমান মান্না, রুহুল কবির রিজভী, নুরুল হক নুর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতেন। আপনাদের এই দেশের মানুষ ক্ষমা করবেন না।
বিএনপি শান্তিপ্রিয় ও গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাসী মানুষদের সংগঠন উল্লেখ করে মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সংস্কার-সংস্কার করে চিৎকার করে সবাই কথা বলছেন। অথচ সংস্কারের জন্মদাতা বিএনপি। জিয়াউর রহমান খাল খনন কর্মসূচি নিয়েছিলেন, সেটিই ছিল সংস্কারের শুরু। বিএনপির হাতেই বাংলাদেশের সব সংস্কার সাধিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ দফা বাংলাদেশের মানুষের জাতীয় মুক্তির সনদ।
তারেক রহমান কন্যা জায়মা রহমান চতুর্থ প্রজন্মে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ড্যাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। ড্যাব সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. আবুল কেনান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক ডা. খালিকুজ্জামান দিপু, বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।