জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত

৬ মাস পর পারিবারিক কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হাসান

মো. হাসানকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়
মো. হাসানকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়  © টিডিসি সম্পাদিত

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ওই দিন বিকেলে সারা দেশে বিজয় মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় ওই বিজয় মিছিলে যোগ দিতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ভোলার ছেলে মো. হাসান। দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস পর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে হাসানের লাশ শনাক্ত করেন পরিবার। এরপর ঢামেক কতৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে হাসানের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। আজ শনিবার (১৫ ফ্রেবুয়ারি) সকালে ভোলা সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের শাহামাদার গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে হাসানকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।

আর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাচিয়া শাহামাদার মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শতশত মানুষের উপস্থিতিতে তার দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে হাসানের বাবা-ভাইসহ স্থানীয়রা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভোলার সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।

হাসান শাহামাদার গ্রামের মো. মনির হোসেনের ছেলে। চার ভাই-বোনের মধ্যে হাসান ছিলেন মনির-গোলেনুর দম্পত্তির দ্বিতীয় সন্তান।

এর আগে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে হাসানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা লাশ নিয়ে কফিন মিছিল করেন।

হাসানের বাবা মনির হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘ ছয় মাস হাসানকে খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের ফরেনসিক বিভাবে আমরা একটি লাশ শনাক্ত করি। এরপর তারা আমাদের ডিএনএর নমুনা পরিক্ষা করে শনাক্তপূর্বক আমাদের কাছে শুক্রবার দুপুরে হাসানের লাশ হস্তান্তর করেন।’

হাসানের বড় বোন শাহনাজ বেগম বলেন, ‘আমার ভাই কী দোষ করল যে তাকে প্রানে মেরে ফেলতে হয়েছে। আমরা দীর্ঘ ৬ মাস পর ভাইয়ের লাশ পেয়েছি। আমার ভাইয়ের হত্যার সঠিক বিচার চাই। হাসানকে যারা হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’

এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন মা গোলেনুর বেগম। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। নির্বাক ছাউনিতে শেষ বারের মত হাসানকে একনজর দেখতে ভিড় করছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

স্থানীয়রা বলছেন, হাসান ছেলে হিসেবে অনেক ভালো ছিলেন। অভাব-অনটনে থাকা পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে আনতে জীবনের তাগিদে ঢাকায় গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, সেখানে গিয়েও চিরতরে হারিয়ে গেলেন সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম এই ব্যক্তি। যেহেতু সরকার পতনের আন্দোলনে গিয়ে হাসান শহীদ হয়েছেন, সেহেতু বর্তমান সরকারের কাছে এই পরিবারের জন্য আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ