বেনজীরকে গ্রেফতারে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারিতে নির্দেশনা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫০ PM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫১ PM
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই নির্দেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দেন। আবেদনে বলা হয়, বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা অবৈধভাবে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন এবং বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে থেকে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িত আছেন। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনের আওতায় আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা প্রয়োজন। শুনানি শেষে আদালত এই নির্দেশ দেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন ২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে। এসব মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। এরপর ১৮ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশনের এক সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। অনুসন্ধানে উঠে আসে, বেনজীর ও তাঁর পরিবারের নামে ৬৯৭ বিঘা জমি, ১৯টি কোম্পানির শেয়ার, ঢাকায় ১২টি ফ্ল্যাট, ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব ও তিনটি বিও হিসাব রয়েছে। আদালতের আদেশে এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করা হয়।
অনুসন্ধান শুরুর পর মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দেশ ছাড়েন বেনজীর আহমেদ। দুদক তাঁর বিরুদ্ধে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠালেও তিনি হাজির হননি। এরপর ২ জুলাই তাঁর পরিবারের সম্পদের বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠানো হয়। আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর আইনজীবী পরিবারের চার সদস্যের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন।
এর আগেও আদালত একাধিকবার বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সম্পদ জব্দের নির্দেশ দেয়। গত বছরের ২৩ মে ৩৪৫ বিঘা জমি ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়। ২৬ মে আদালতের আরেক আদেশে ১১৯টি জমির দলিল, ২৩টি কোম্পানির শেয়ার ও গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট জব্দ করা হয়। সব মিলিয়ে ৬২৭ বিঘা জমি ক্রোক করা হয়েছে এবং এসব সম্পত্তি দেখভালের জন্য রিসিভার নিয়োগ করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশের আইজি ছিলেন। এর আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালক ও ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুদকের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।