‘ফজরের আযান শুনে বুঝতাম এখন ভোর’—আয়নাঘরে ৩৬ দিন কাটানো রিফাত

আবু বিন তারেক রিফাত
আবু বিন তারেক রিফাত  © সংগৃহীত

বন্দিশালা আয়নাঘরের অন্ধকার কুঠুরিতে কাটে আবু বিন তারেক রিফাতের ৩৬ দিন। গুমের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে গুম হন তিনি। দীর্ঘ ৮ বছর ভয়ে মুখ না খুললেও স্বৈরাচারমুক্ত এ সময়ে দিনগুলোর ভয়াবহতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। একটি গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা জানান। 

জানা গেছে, আবু বিন তারেক রিফাত ২০১৫ সালে এইচএসসি পাস করে সবেমাত্র অনার্সে ভর্তি হয়েছেন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে। তার দাবি গুমের বিরুদ্ধে ফেসবুকে একটা পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি। আর সে অপরাধেই ২০১৫ সালের ১৮ অক্টোবর উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের বাসা থেকে সন্ধ্যার দিকে চোখে কালো কাপড় বেঁধে তুলে নেয়া হয় তাকে।

রিফাত বলেন, ‘আমি ফেসবুকে পোস্ট করেছি সরকারের উচ্চমহলের বিরুদ্ধে, এটা বলে আমাকে বাসা থেকে আমার মা ও বোনের সামনে থেকে নিয়ে যাওয়া হলো। কিছুদূর যাওয়ার পরই আমাকে হাতে হ্যান্ডকাফ ও মাথায় কালো টুপি পরানো হয়। পরে এক অন্ধকার কুঠুরিতে ঢুকিয়ে দেয়া হয় আমাকে। টানা ৩৬ দিন ঘুমাতে দেয়া হয়নি। ছিল না গোসল কিংবা খাওয়ার ব্যবস্থাও। আলো-বাতসহীন রুমে আমার ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন।’

তিনি বলেন, ‘সেখানে কোন ফ্যান ছিল না। অনেক গরম। রুমে কোন জানালা নেই। রাত হচ্ছে না দিন হচ্ছে কিছুই বুঝার উপায় নাই। ফজরের আযান শুনে বুঝতাম এখন ভোর। আর দু-একদিন পর পর রুম পাল্টাতো। কোন কোন রুমে গিয়ে বুঝতাম অনেক লোকজন। গায়ের সাথে ধাক্কা লাগতো। কেউ কান্না করতো।’

মারধরের বর্ণনা দিয়ে রিফাত বলেন, ‘প্রচুর মারতো। আমার মনে হয়, যে লোকগুলোকে মারা হয় তারা আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে না; হাঁটাচলাও করতে পারবে না।’

কয়েক দফা ক্রসফায়ারের জন্য নেয়া হলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে ফেরেন রিফাত। ঢাকা থেকে গ্রেফতার হলেও কুমিল্লা থেকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে।
তিনি বলেন, ‘গভীর রাতে আমাকে নিয়ে যেত কোন একটা ফাঁকা জায়গায়। আমার সাথে যারা গেছে, তারা আর ফিরে আসেনি। 

আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি এখনও রিফাত। র‌্যাবের দেয়া অস্ত্র মামলায় সহায়-সম্বল বিক্রি করে এখন অসহায় রিফাতের পরিবার।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence