‘স্বৈরাচারীশক্তি আনসার হয়ে ফিরে আসতে চাচ্ছে’

সারজিস আলম
সারজিস আলম  © সংগৃহীত

স্বৈরাচারীশক্তি আনসার হয়ে ফিরে আসতে চাচ্ছে- এমনটাই দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। রবিবার (২৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে তিনি এই মন্তব্য করেন।

পরে আরেক স্ট্যাটাসে সারজিস বলেন, এরা পুরনো শকুন। এটি তাদের বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ। তাদের সব পরিকল্পনা ছাত্র-জনতা ধুলোয় মিশিয়ে দেবে। তিনি বলেন, ‘দাবি মানার পরও আমাদের সবাইকে সচিবালয়ে আটকে রাখা হয়েছে।’ এ সময় শিক্ষার্থীদের রাজপথে নেমে আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে সারজিস-হাসনাতসহ সমন্বয়কদের সচিবালয়ে আটকে রাখে আন্দোলনরত আনসাররা। সর্বশেষ তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রাত সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলনের ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পুড়িয়েছেন আনসার সদস্যদের পোশাক।

জানা গেছে, আনসার বাহিনীর সদস্যদের আন্দোলনের মুখে সচিবালয়ের সব গেট বন্ধ করে রাখা হয়। দিনব্যাপী এ আন্দোলন চলার পর রাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী। ফলে সচিবালয়ের পেছনের ওয়াচ টাওয়ার দিয়ে উঁচু প্রাচীর টপকে বাইরে বের হন এপিবিএনের সদস্যরা। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ে গিয়ে ধাওয়া দিলে পালিয়ে যান আনসার সদস্যরা। এ সময় বেশ কিছু আনসার সদস্য পালিয়ে যান। 

আনসারদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। তাদের আশ্বাস দেওয়ার পরও চাকরি জাতীয়করণ করা হয়নি। দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত সচিবালয় থেকে কাউকে বের হতে দেবেন না এবং কাউকে প্রবেশ করতে দেবেন না।

এদিকে সচিবালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের অবরুদ্ধ করে রাখা এবং তাদের মুক্ত করতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের উপর আনসার সদস্যদের হামলার প্রতিবাদে যেকোন অপশক্তির ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্র সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (২৫ আগস্ট) রাত ১১ টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়ামোড়ে শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে এসে ছাত্র সমাবেশে মিলিত হয়। মিছিলে ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, তানভীর মন্ডলসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। 

মিছিলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই; রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়; দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেবো রক্ত; আওয়ামী লীগের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান; ভারতের দালালেরা, হুশিয়ার সাবধান; আওয়ামী লীগের চামড়া, তুলে নেব আমরা  ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। 

মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা বলেন, চব্বিশের পরাজিত শক্তি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রূপে দেশে অরাজকতার সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারই অংশ হিসেবে আজ সচিবালয়ে আমাদের ভাইদের উপরে আনসার সদস্যদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যদি এ ধরনের হামলা করার অপচেষ্টা করা হয়, তাদের দাত ভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীরা প্রস্তুত রয়েছে শিক্ষার্থীরা। এ সরকার উপর আমাদের কোন আস্থা আছে। কেউ যদি এই সরকারকে পদচ্যুত করার চেষ্টা করে, আমরা ছাত্র জনতা রাজপথে নেমে তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করব। 

ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে একটি কুচক্রী মহল সর্বক্ষেত্রে ষড়যন্ত্রের প্রচেষ্টা করছে। এর আগে বিচার বিভাগীয় ক্যু করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আজ আনসারদের উপর ভর করে তারা ক্যু করার চেষ্টা করেছে। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের ফসল এই অন্তর্ভুক্ত করেন সরকারকে যেখানেই বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হবে,  সেখানেই তাদের শক্তহাতে প্রতিহত করা হবে। 


সর্বশেষ সংবাদ