‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ দিবস

চলুন আজ দায়িত্ব নিয়ে বন্ধুদের সম্মান জানাই

বন্ধুত্ব
বন্ধুত্ব  © সংগৃহীত

বেস্ট ফ্রেন্ড বা সেরা বন্ধু আমরা তাদেরই বলি যাদের সঙ্গে আমাদের ঝগড়া, মনোমালিন্য, দূরত্ব যেটাই হোক; অন্তরের বন্ধনটা ঠিক থাকে। সামান্য ভুল-বোঝাবুঝি যে বন্ধুত্ব নষ্ট করতে পারে না। এ বন্ধুগুলো আমাদের কঠিন সময়গুলোকে অনেকটা সহজ করার পাশাপাশি মুহূর্তগুলোকেও স্মরণীয় করে দেয়। বন্ধুগুলো এমন, কখনও হাসাবে, কখনও ক্ষেপিয়ে তুলবে, কখনও পাশে থেকে সান্ত্বনা দেবে আবার কখনও দূরে যাবে। কখনও পাত্তা দেবে না। এদের কেউ অনেকটাই আমাদের মনের মতো, আবার কখনও কখনও আমাদের পুরো বিপরীত চরিত্রেরও হতে পারে। কিন্তু একই স্বভাব কিংবা বিপরীত স্বভাব কখনই সত্যিকার বন্ধুত্বে বাঁধা হয় না।

বন্ধু তো সেই-ই যে সবসময় আপনার পাশে ছিল, যেকোনো পরিস্থিতিতে। এমন কেউ যার সঙ্গে আপনি অবলীলায় ভাগ করে নিতে পারেন আপনার দুঃখ, আপনার যা কিছু গোপন। যারা আপনার আড়ালে আপনার গোপন কোনোকিছুই কারও কাছে বলবে না। তাদের কাছে আপনি এবং আপনার সবকিছুই নিরাপদ। আচ্ছা এত নিরাপত্তা যাদের কাছে পান, তাদেরকে কি কখনও জানানো হয়েছে যে তারা আপনার জীবনে কতটা স্থান দখল করে আছে?

আমাদের জীবনে আসা বেস্ট ফ্রেন্ডকে আমরা কোথায় পেয়েছিলাম, ওটা কিন্তু একদমই মুখ্য না। কত বছরের সম্পর্ক, ওটাও বিষয় না। মুখ্য হলো, মানুষটা আমাদের কতটা বোঝে আর কেমন করে বোঝে। আমাদের যখন কিছু বলার ইচ্ছা হয়, অন্তত শোনার মতো যদি কেউ একজন থাকে তবে এটা কি আনন্দের নয়? এত ব্যস্ততার যুগেও কেউ সময় করে আমাদের পাশে থাকছে, এটা কিন্তু বিরাট কিছু।

আমাদের একাকিত্বে, আমাদের মন খারাপে পাশে কেউ একজন থাকা মানে আমরা আসলেই ভাগ্যবান এবং ভাগ্যবতী। আর এ তো জানেন, কষ্টের সময়ে একান্ত পাশে যে মানুষটাকে আমরা পাই তাকে ভীষণ আপন মনে হয়। এই আপনের কারণে হলেও তো তাদেরকে একটু ভালোবাসা জানানোই যায়।

অনেকে ভাবেন, বন্ধুকে ভালোবাসি এটা আবার ঘটা করে জানানোর কি আছে? বিষয় হলো- কোনো সম্পর্কই কিন্তু সবসময় দুষ্টামি, কান্না, হাসিতে চলতে পারে না। মাঝে মাঝে একটু সহানুভূতি, মমতা আর ভালোবাসা দেখানোরও প্রয়োজন হয়। মুখে বলার চেয়ে কাজে যদি বুঝিয়ে দেওয়া যায় তো খুবই ভালো।

এই যে এতকিছু পড়ে ফেললেন, ভেবে দেখুন তো পড়ার সময়ে কার কথা মাথায় এসেছে! বেস্ট ফ্রেন্ড একজনই থাকে, এমন নয় বিষয়টা বরং একাধিকও থাকতে পারে। একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে ৯৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরীর এক বা একাধিক ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকে। ৭৮ শতাংশের রয়েছে ৫ জনের মতো বন্ধু সংখ্যা। ওদিকে আমাদের বয়স যত সংখ্যা যোগ করতে থাকে, বন্ধু নির্বাচনে আরও সচেতন হয়ে যাই আমরা। এ কারণেই হয়ত শায়ানের গলায় আবেগ ভরে উচ্চারিত হয়েছিল লাইনগুলো- কেন বাড়লে বয়স ছোট্ট বেলার বন্ধু হারিয়ে যায়। কেন হারাচ্ছে সব, বাড়াচ্ছে ভীড় হারানোর তালিকায়!

আমাদের যাদের জীবনে এই বেস্ট ফ্রেন্ড নামক কেউ আছে, আজ তাদের দিন। সারা বছর এই বন্ধুদেরকে অনেক ক্ষেপাই, চলুন আজ একটু দায়িত্ব নিয়ে তাদের সম্মান জানাই। প্রতিদিন যেমন তেমন কাটালেও আজ বন্ধুদের একটা বার্তা দেওয়াই যায়। তাদেরকে বুঝানো দরকার, আমাদের জীবনে তারা আসলে কী।

কাছে থাকুন বা দূরে, একটা উপহার না হলেও একটা বার্তা কিন্তু পাঠাতেই পারেন তাদের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুকে নিয়ে আবেগঘন, মজাদার কিংবা স্মৃতিময় ছবি, লেখা, ভিডিও শেয়ার করতে পারেন। বন্ধুকে নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন। সিনেমা দেখা যেতে পারে। সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করা যেতে পারে। বন্ধুকে তার প্রিয় কিছু উপহার দিতে পারেন। বন্ধুকে বলা হয়নি কখনো, এমন না বলা জমিয়ে রাখা কথামালায় সাজিয়ে চিঠি লিখতে পারেন।


সর্বশেষ সংবাদ