ঢাকায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি স্থাপনা ঘুরে দেখল উপকূলের ৪০ শিক্ষার্থী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৪, ১০:৪৭ AM , আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৪, ১০:৫১ AM
বাংলাদেশের উপকূলের পিছিয়ে পড়া ৪০ জন শিক্ষার্থী ও ছয় শিক্ষকের অংশগ্রহণে ঢাকায় আয়োজিত হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তক স্থান পরিদর্শন মূলক আয়োজন ‘অবাক কুতূহলে’। গত শুক্র ও শনিবার দিনভর ঢাকার বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও আইসিটি বিষয়ক বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন তারা। উপকূলের তিনটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা বাগেরহাটের রামপাল, খুলনার রূপসা ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলা থেকে আসে শিক্ষার্থীরা।
তাদের বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ‘অবাক কুতূহলে’ নামের এ আয়োজনটির উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন)। মালালা ফান্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘STEM & ICT Skills for the Girls of Coastal Area (SISGCA)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উপকূলের ছয়টি বিদ্যালয়- বড়কাটালি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রামপাল; পেড়িখালি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রামপাল; শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তালা; শহীদ কামেল মডেল হাইস্কুল, তালা; নৈহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তালা ও উদ্দীপন বদর সামছু বিদ্যানিকেতন, বাগেরহাট’র শিক্ষার্থীরা গত ৭ মার্চ ঢাকায় এসে পৌঁছায়।
৮ ও ৯ মার্চ দু’টি বাসযোগে দুইদিনব্যাপী সংসদ ভবন, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দৈনিক সংবাদপত্র প্রথম আলো এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ওলিও ও ব্রেইনস্টেশন ২৩ পরিদর্শন করে। শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি) বিভাগ ঘুরে দেখে। বিভাগের মেয়ে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণকারীদের পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল দেখে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হবার স্বপ্ন দেখছে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শহীদ আলী আহম্মদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী তহমিনা খান প্রাপ্তি। বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর আইটি প্রতিষ্ঠান ওলিও ঘুরে অবাক উদ্দীপন বদর সামছু বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সে বলেছে, ‘পড়াশুনা শেষ করে আমিও এমন প্রতিষ্ঠানের সদস্য হতে চাই।’
তার মতো বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার পেড়িখালি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী লাবণ্য আক্তার লাবনী নভোথিয়েটার ও বিজ্ঞান জাদুঘর দেখে আনন্দিত। নভোথিয়েটারে এসে গ্রহ নক্ষত্র সম্পর্কে অনেক কিছু শিখেছে সে। জাদুঘরের ফসিল সংরক্ষণ তাকে অভিভূত করেছে।
আরো পড়ুন: ঢাবিতে বিতর্ক: গ্রীষ্ম, বর্ষা না বসন্ত ঋতু সেরা?
এরপর তাদের জন্য আয়োজিত একটি সেশনে শিক্ষার্থীদের সাথে গল্প করেন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, উইন ইনকর্পোরেট এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. কাশফিয়া আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের বলেন, সামনের দিনে সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন হবে দক্ষ মানুষ। নয়তো একটি সফটওয়্যার মানুষের জায়গা দখল করে নেবে। এজন্য একজন মানুষের যেসব গুণ এবং দক্ষতা থাকা প্রয়োজন, তা এখন থেকেই শিখে নিতে হবে।
মেয়েদের সঙ্গে আসা শহীদ কামেল মডেল হাই স্কুলের শিক্ষক চন্দনা রাণী গুহ বলেন, আমাদের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় মেয়েদের জন্য এমন সুযোগ এখনো অকল্পনীয়। এ ভ্রমণ তাদের জীবন নিয়ে অন্যভাবে ভাবতে সাহায্য করবে। আজ শিক্ষার্থীরা অনেক স্বপ্ন এবং আনন্দ নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করল।