‘মৈত্রী পাইপলাইন’ পারস্পরিক সহযোগিতার মাইলফলক: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  © সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন’ দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার একটি মাইলফলক। আমি বিশ্বাস করি এই মৈত্রী পাইপলাইন আমাদের দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে সহযোগিতা উন্নয়নের একটি মাইলফলক অর্জন।

শনিবার (১৮ মার্চ) গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ এই মৈত্রী পাইপলাইন উদ্বোধন করেন।

পাইপলাইনটি উদ্বোধনের পর উভয় প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি, পারস্পরিক সুবিধার জন্য দেশ দুটির মধ্যে কানেকটিভিটি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার উপরও তাঁরা জোর দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে। ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। আমাদের দুই দেশের এই বন্ধুত্ব অটুট থাকুক সেটাই আমি চাই। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে সেটাকে আমরা কার্যকর করতে চাই। আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা আরও উন্নত করতে চাই, যাতে, ভারতের সঙ্গে আমাদের এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দুই দেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়ন ও কল্যাণে আমরা একসাথে কাজ করে যেতে পারি, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। কারণ, আমরা চাই আমাদের দেশের এই উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হোক। সেই সাথে আমাদের মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর এবং সিলেট, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নত করেছি। এগুলো ভারতের জন্য সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিচ্ছি যাতে এই বন্দরগুলো ব্যবহারে ভারতের কোন অসুবিধা না হয়। এরফলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজ হবে এবং দুই দেশের মানুষই লাভবান হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সারাদেশে ১শ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আমি চাই, ভারতের বিনিয়োগকারীরা সেখানে এসে আরও বিনিয়োগ করুন। আমরা দুই দেশই তাতে লাভবান হবো। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দিনেও ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের মতো আরও সফলতা বাংলাদেশ-ভারত যৌথভাবে উদযাপন করবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একইসঙ্গে কাজ করবে।

তিনি বলেন, এই ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন চালুর ফলে বাংলাদেশের জনগণ নানাভাবে উপকৃত হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে যখন বিশ্বের অনেক দেশ জ্বালানি সংকটের মুখোমুখি তখন এই পাইপলাইনটি আমাদের জনগণের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানিতে ব্যয় এবং সময়ও উল্লেখযোগ্য ভবে হ্রাস পাবে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, এই পাইপলাইন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় ডিজেলের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করবে। বর্তমানে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে ভারত থেকে বছরে ৬০ থেকে ৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা সম্ভব হতো। পাইপলাইন নির্মাণের ফলে বছরে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা সম্ভব হবে।

প্রধানমন্ত্রী পাইপলাইন নির্মাণে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের জন্য ভারত সরকার এবং আসামের মুখ্যমন্ত্রীসহ আসামের জনগণের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।

নতুন এ পাইপ লাইনের মাধ্যমে ভারতীয় লাইন অফ ক্রেডিট (এলওসি) থেকে নেওয়া প্রায় ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি ব্যয়ে নির্মিত ১৩১ দশমিক ৫ কি.মি ভারত-বাংলাদেশ  মৈত্রী পাইপলাইনের (আইবিএফপিএল) মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজেল রপ্তানি করবে ভারত। ভারতের শিলিগুড়ির নুমালীগড় রিফাইনারী থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার পাইপলাইনে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ডিপোতে ডিজেল আমদানি করা হবে। এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে পড়েছে প্রায় ১২৫ এবং ভারতের অংশে প্রায় ৫ কিলোমিটার। পাইপলাইনটির হাই-স্পিড ডিজেল (এইচএসডি)-এর বার্ষিক পরিবহনের ক্ষমতা ১ (এক) মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমএমটিপিএ)।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence