স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে ১১ অনুরোধ সাবেক সেনা কর্মকর্তার
- তামিম আহমেদ চৌধুরী
- প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২০, ১১:৩৭ AM , আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৮:২০ PM
১। আপনার দৈনিক ব্রিফিং দেবার বিষয়টি স্টপ করুন। কারণ আপনার নিরস বক্তব্য আমাদের হতাশ করে। আপনি দেখে দেখে এবং নিচের দিকে তাকিয়ে পড়েন যা স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে সত্যিই বেমানান। এই ছোট কাজটি অন্য কাউকে দিয়ে দিন অথবা মনোবলের সাথে সুন্দরভাবে নিজকে একজন সত্যিকার করোনা যোদ্ধা হিসাবে উপস্থাপিত করুন।
২। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী, আপনাকে দেখলে অসহায় ও পরাজিত মনে হয়। আপনি কাউকে উৎসাহিত করতে পারছেন না। আপনি স্পষ্টভাবে কথাও বলেন না। You should be very confident, assertive কথা বলার সময়।
৩। আপনার উচিত সন্মুখ থেকে করোনা যুদ্ধ পরিচালনা করা। এই যুদ্ধে আপনিই সেনাপতি। আমরা, সকল ডাক্তার-স্বাস্থ্যকর্মীরা আপনার দিকে তাকিয়ে আছি।
৪। আপনি রোজ কিছু হাসপাতাল কেনো পরিদর্শন করছেন না? আপনি ডাক্তার নার্সদের মনোবল উচু করার জন্য সরাসরি তাদের কর্মস্থলে কেনো ভিজিট করছেন না। রোজ কিছু হাসপাতাল ভিজিট করুন। ডাক্তার নার্সরা যদি রোজ কাজে যেতে পারে তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আপনার দু-একবার পরিদর্শন করতে অসুবিধা কোথায়?
৫। আপনি ভিসিট করলে আমরা জনগণও দেখতে পাবো আমাদের হাসপাতাল গুলো কি প্রস্তুতি নিয়েছে? আমাদের ICU এবং Ventilations এর কি অবস্থা। এতে জনগণের আস্থা ও মনোবল দুটিই বাড়বে।
৬। আপনি চাইলেই সরকারি বা বেসরকারি হেলিকপ্টার এ করে রাজধানীর বাইরে যেতে পারেন বিভিন্ন হাসপাতাল ভিজিট করতে এবং জনপ্রতিনিধি /DC/SP/ Civil Surgeons ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বর্গের সাথে মিটিং করার জন্য। এতে সবার মনোবল উঁচু হবে এবং আপনি সরাসরি সমস্যা শুনে ডিসিশন দিতে পরবেন।
৬। আপনি দরকার হলে Armed Forces, Law Enforcing Agencies, different Ministry এর সাথে coordination meeting করতে পারেন। হয়তো করছেন কিন্তু মিডিয়াতে সেভাবে আসছে না।
৭। আপনি নামকরা Pharmaceuticals company owners দের সাথে এবং বিভিন্ন profession এর সংশ্লিষ্ট সন্মানিত ব্যক্তিবগের সাথে রুটিন পরামর্শ সভা করতে পারেন পরিস্থিতি মূল্যায়ণ এবং করণীয় ঠিক করার বিষয়ে।
৮ । যুদ্ধের গোলাবরুদ ও রশদ সরবরাহের মতো মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে হাসপাতাল সমূহে এবং ডাক্তার নার্সদের দরকারী সকল পোশাক ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ নিশ্চিত করা আপনার প্রধান কর্তব্য। দয়াকরে তা Ensure করুন। ভুল হতে পারে এবং বিশ্বের অন্যদেশও ভুল করছে। কাজেই এখনো সময় আছে।
৯। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমে করোনায় আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাচ্ছেন তাদের কোথায় এবং কিভাবে সমাহিত করা হবে সে বিষয়ে আরো সুস্পস্ট নির্দেশনা দিতে হবে। স্বাস্থ্যগত কোন সমস্যা না থাকলে সকল কবরস্থান উন্মুক্ত করে দিতে হবে এবং কেউ বাধা দিলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে।
১০। জেলা লেভেলে জনপ্রতিনিধি /DC/SP/ Civil Surgeons ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বর্গের সাথে Video Conferencing করে আপনার সরব উপস্থিতি নিশ্চিত করুন এতে সমস্যা শুনতে পাবেন এবং সকলের মনোবলও উঁচু হবে।
১১। মিডিয়াকে এড়িয়ে না চলে তাদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখুন। মাঝে মাঝে TV/ News Editors দের সাথে মতবিনিময় করতে পারেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: আমরা দেখতে পাচ্ছি যে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত নিষ্ঠা ও মনোবল নিয়ে রাতদিন এককরে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছেন। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয়, মনে রাখবেন আপনি কিন্তু তার করোনা যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এবং আপনি একানন সুতরাং আজই নেমে পড়ুন নুতন উদ্যমে। আপনার শুভকামনা করছি। ধন্যবাদ।
লেখক: সাবেক সেনা কর্মকর্তা