মাস্ক ব্যবহার জরুরি নয় কেন?

এসএম নাদিম মাহমুদ
এসএম নাদিম মাহমুদ  © টিডিসি ফটো

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশ জুড়ে মাস্ক ব্যবহারে সবাই জোর দিয়েছে। কোথাও কোথাও মাস্ক ব্যবহারের জন্য আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কিংবা সরকারি কর্মকর্তারা সাধারণ মানুষের উপর জবরদস্তি শুরু করছেন। আপনাদের সবার ধারণা, মাস্ক পড়লেই, আপনার শরীরে করোনা প্রবেশ করবে না। আপনাকে সুরক্ষা দেবে।

ঠিক, এই ভুল ধারনা নিয়ে দেশব্যাপী অনেকটা ‘গুজবে’ আদলে মাস্ক পড়ার মহাৎসবে মেতে উঠেছে। আমি আগেও বলেছি আবার বলছি, আপনি যে মাস্ক পড়ছেন কিংবা যেভাবে পড়ছেন, তাতে করোনাভাইরাসকে কখনো প্রতিরোধ করতে পারবেন না। বরং করোনাকে কাছে টানবেন।

মাস্ক পড়ে, বারবার যে হাত দিয়ে মাস্ক নাড়াচড়া করছেন, অস্বস্তির জন্য মাঝে মধ্যে খুলছেন-মেলছেন, তা আপনার জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আপনি যে হাত দিয়ে বারবরা মাস্ক স্পর্শ করছেন, সেই হাতে যদি সত্যি সত্যি করোনা ভাইরাস লেগেও থাকে তাহলে সেটি আপনার শরীরে ট্রান্সমিট হওয়ার জন্য যথেষ্ট। আর যদি মাস্কে স্পর্শও করেন কিংবা খুলে ফেলেন, তাহলে সাথে সাথে হাত ধুয়ে নিন।

আপনি যদি সুস্থ থাকেন, দয়া করে এখন থেকেই মাস্ক পড়া বাদ দিন। বরং মুখে, চোখে হাত দেয়া থেকে বিরত থাকার প্রাকটিস করুন, তাতেই আপনি বেশি সুরক্ষিত থাকবেন।

মনে রাখবেন, সাধারণত সার্জিক্যাল মাস্কগুলোর বিএফই লেবেল হচ্ছে ৩ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত এবং পার্টিকেল ফিল্ট্রেশন দক্ষতা ০.৩ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত। সবচেয়ে ভাল এন৯৫ (তেল প্রতিরোধী নয়) টাইপের মাস্ক মূলত ০.৩ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকে পরিস্রাবণ বা ফিলট্রেশন করতে পারে, সেখানে SARS-CoV-2 ভাইরাসটির ব্যাস ০.০৬ থেকে ০.১৪ মাইক্রোমিটারের যা প্রচলিত বাজারের মাস্কের ছিদ্র বা পোরের চেয়ে পাঁচগুণ ছোট। তাই মাস্ক দিয়ে করোনাভাইরাসকে ঠেকানো সম্ভব নয়।

আর মাস্ক তারাই পড়ুন, যারা কেবলই অসুস্থ। এই অসুস্থরা যদি মাস্ক পড়ে, তাহলে তারা যেমন সুরক্ষিত থাকবেন, তেমনি অন্যরা সুরক্ষিত থাকবেন।

লেখক: পিএইচডি গবেষক, ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান


সর্বশেষ সংবাদ