রমযানে ইফতারের গুরুত্ব
- তাওহিদুল ইসলাম নাবিল
- প্রকাশ: ১১ মে ২০১৯, ০৫:১৯ PM , আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০১:১৭ AM
ভ্রাতৃত্ব, বন্ধন ও পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা তৈরির অন্যতম মাধ্যম হলো ইফতার। সারাদিন রোজা রেখে আরেকজনকে নিয়ে ইফতার করার মাঝে অনেক আনন্দ আছে এবং এতে বহুগুণ ছওয়াব।আমাদের পাড়ায়-মহল্লায় ইফতারের সময় পাশের বাড়িতে ইফতার পাঠানোর রেওয়াজ বহুদিনের সংস্কৃতি এবং পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করে।
বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের ক্যাম্পাসগুলোতেও ইফতারের সময় আনন্দের দুম পড়ে। ক্যাম্পাসের আনাচে কানাচে বসে সবাই মিলে ইফতার করার মাঝে আলাদা ভালো লাগা কাজ করে। আর এই ইফতার কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং মর্যাদা সম্পন্ন সেটা বর্ণনা রয়েছে হাদীসে, ‘যায়েদ বিন খালেদ জুহানী (রা.) থেকে বর্ণিত— রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করালো, তাকে রোযাদারের অনুরূপ সওয়াব দান করা হবে। কিন্তু রোযাদারের সওয়াবের কোন কমতি হবে না’। [তিরমিযী]
রসূল (সা.) বলেন, ‘কেউ যদি রমজান মাসে কোনো রোজাদারকে ইফতার করায় তাহলে ঐ ইফতার করানোটা তার গুনাহ মাফের ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির কারণ হবে এবং সে একটি রোজার সওয়াব পাবে অথচ রোজা পালনকারীর নেকী মোটেই কমানো হবে না।’
অন্য এক হাদীসে এসেছে, আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত— রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘রোযাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে, যখন সে আনন্দিত হবে। এক. যখন সে ইফতার করে তখন ইফতারের কারণে আনন্দ পায়। দুই. যখন সে তার রবের সাথে মিলিত হবে তখন তার রোযার কারণে আনন্দিত হবে’। [সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম]আমরা এতেই বুঝি ইফতার কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
ইফতার শব্দটি আরবি ফুতুর শব্দ থেকে এসেছে। ফুতুর অর্থ নাস্তা। ইফতারের অর্থ খোলা, উন্মুক্ত করা, ছেড়ে দেয়া ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় সূর্যাস্তের পর খেজুর, পানি বা কোনো খাদ্যদ্রব্য ভক্ষণের মাধ্যমে রোজা ছেড়ে দেয়াকে ইফতার বলে। অর্থাৎ সারাদিন রোজা রাখার পর মাগরিবের আজানের সাথে সাথে ভক্ষণ করাকে ইফতার বলে।
সাহরী আর ইফতারের মাঝে অন্যতম পার্থক্য হলো সাহরী দেরিতে খাওয়া সুন্নত কিন্তু ইফতার দ্রুত করা সুন্নত। এ প্রসঙ্গে হাদীসে এসেছে, ‘আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত— রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমার বান্দাদের মধ্যে আমার কাছে তারাই বেশি প্রিয় যারা দ্রুত ইফতার করে নেয়। [তিরমিযী, মিশকাত]’
যে যত দ্রুত অর্থাৎ আজানের সাথে সাথে ইফতার করবে তার মর্যাদা বেশি। আল্লাহর রসুল (স.) বলেন— লোকেরা ততক্ষণ কল্যাণে থাকবে যতক্ষণ তারা ইফতার জলদি করবে। (বুখারী, মুসলিম ১ খণ্ড-৩২১ পৃঃ মিশকাত ১৭৫ পৃঃ)
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১০ব্যাচ, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ