এবারের ঈদ তাদের জন্য অন্যরকম

  © সংগৃহীত

ছোটবেলায় আব্বুর হাত ধরে ঈদগাহ মাঠে যাইতাম। আব্বুর সাথে ঈদের নামাজ পড়ে এসে কুরবানীর গরু নিয়ে সেইরকম কৌতুহল ছিলো। গরু জবাই থেকে গরীব দুঃখী ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে মাংস বিলি। এ এক অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করতো। 

কথাগুলো বলছিলেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন আকাশ। ছোটবেলার ঈদ স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে এভাবেই স্মৃতিকাতর হয়ে পরেন তিনি। 

তারই আরেক সহযোদ্ধা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম এম মাসুদ রানা মিঠু। ছোটবেলার ঈদের স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে তিনি বলেন, "সকালে ঈদের নামাজ পড়ে এসে বাবা-মা'র থেকে নতুন নোট পাওয়ার যে ভালো লাগা, সেটা অন্যরকম। এটি আমাকে সবসময়ই স্মৃতি কাতর করে।"

এর আগের ঈদগুলো তাদের জীবনে একভাবে আসলেও এবার এসেছে অন্যভাবে। এখন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা। ছাত্রছাত্রীদের সুখেদুঃখে তাদের সঙ্গী হবার সময়।

আগে কীভাবে কাটতো তাদের ঈদ- এই প্রশ্ন ছিলো দুই ছাত্রনেতার কাছে। এই প্রশ্নে আলমগীর হোসেন আকাশ বলেন, নরমালি ঈদ করা হয় বাসায়, তবে ঈদে অবশ্যই সনাতন যারা থাকে তাদের জন্য খাবার ব্যবস্থা করা কিংবা বাসায় ডেকে নিয়ে খাওয়ানো এই বিষয়টা করা হয়। ঈদের নামাজ বড় মাঠেই পড়া হয়। তবে গ্রামের বাসায় যাওয়া হয়, দাদা-দাদীর কবর জিয়ারত করতে যাওয়া হয়। এবার বাবা-মা দুইজনে হজ্বে আছেন। তবুও গ্রামের বাসায় কুরবানি করা হবে। সেখানে গিয়ে পাড়া প্রতিবেশী এবং আত্মীয় স্বজনদের মাঝে মাংস বিলি করা হবে।

মাসুদ রানা মিঠুর কণ্ঠেও একই সুর। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হিসেবে এটাই আমার প্রথম ঈদ। এর আগের ঈদে আমি ঢাকা ছিলাম যার জন্য পরিবারের সাথে ঈদে থাকতে পারিনি। এবার সুযোগ হয়েছে পরিবারের এবং নিজ এলাকার মানুষদেরদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার। এবারের ইদ আমার জন্য স্পেশাল।

তাদের অনুসারী, সাধারণ শিক্ষার্থী, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার প্রতি ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তারা দুজন পৃথক বার্তা দিয়েছেন। সভাপতি আলমগীর হোসেন আকাশ বলেন, সবার প্রতি একটাই বার্তা, অবশ্যই কুরবানীর ঈদ নিজের সামর্থের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে আমাদের আশেপাশের অসহায় ও আত্মীয় স্বজনদের মাঝে কুরবানীর মাংস শেয়ার করবো। সবার মাঝে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে চাই। সবাই সাবধানে ও নিরাপদে থাকুক। পরিবারের সাথে সুন্দর একটা সময় কাটায়। নিরাপদে যেন সবাই ক্যাম্পাসে ফিরে আসে এই প্রত্যাশা। সেইসাথে সবার সুস্থতা কামনা করছি। ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হোক ঈদুল আজহা। ভালবাসা সবার জন্য।

সাধারণ সম্পাদক এম এম মাসুদ রানা মিঠু বলেন, আমি চাই সবাইকে সাথে নিয়ে ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে সবার সুখে নিজেকে সুখী রাখার জন্য। সবার কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারা আনন্দটাকে ভাগাভাগি করবেন।আমাদের আশেপাশে যারা মানুষজন আছেন অনেকে তো কোরবানী দিতে পারবেনা, তারা যেন কষ্টে না থাকে। তারা যেন কোরবানীর মাংস খেতে পারে এটুকু আহ্বান থাকবে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হাবিপ্রবি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। আমরা চেষ্টা করবো ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত হয়ে সকলকে নিয়ে কাজ করার যে মানসিকতা তা এই ঈদের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চাই এবং আমরা বিশ্বাস করি যে ধর্মীয় অনুশাসন এবং রাজনীতি কোনো সাংঘর্ষিক বিষয় না। ধর্মীয় অনুশাসন মেনেই, ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেই আমরা রাজনীতি করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে আমার পক্ষথেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা।

ঈদ সালামীর প্রসঙ্গে এই দুই ছাত্রনেতা বলেন, ঈদ সালামী সেভাবে না পেলেও নিজেদের সামর্থ্যানুযায়ী ঈদ সালামী দিয়েছেন নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের।


সর্বশেষ সংবাদ