দর্শক ভুল বুঝে ‘রূপান্তর’ নাটক নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে

রাসেল ইব্রাহীম
রাসেল ইব্রাহীম  © সংগৃহীত

গালি দেবেন না, নেতিবাচক মন্তব্য করবেন না, সবিনয় অনুরোধ। আগে পড়ুন, পুরোটা পড়ুন এবং তারপর মন্তব্য করুন। আপনি ফেসবুকে, এর মানে আপনি একজন সচেতন মানুষ এবং সুশিক্ষিত। আলোচিত নাটক ‘রূপান্তর’ নিয়ে কথা বলছি। নাটকটি লিখেছেন খ্যাতিমান নাট্যকার নিহার আহমেদ স্যার। যিনি একাধারে নাট্যকার এবং গীতিকবি।

যাইহোক, হয়তো আপনি/আপনারা নাটক দেখেননি। না দেখেই প্রতিবাদ করেছেন 'চিলে কান নিয়ে গেল’ গল্পের মতো। আগে নাটক নিয়ে একটু আলোচনা করি।

সামিরার (রিমঝিম) জন্মদিনে মামা পোট্রেট (প্রতিকৃতি) উপহার দিল। উপহার পেয়ে সামিরা চিত্রশিল্পী জোভানের (সৌরভ) সাথে দেখা করতে গেল। জোভান ছবি দেখে পোট্রেট আঁকে, এটা তার পেশা। তবে সে কারো সাথে দেখা করে না। সামিরা অনুমতি ছাড়াই জোভানের কক্ষে প্রবেশ করে এবং পরনে কাপড় দেখে অবাক হয়ে বলে, আপনি মেয়েদের পোশাক পরে বসে আছেন কেন? আপনি ফিমেল সেজে বসে আছেন ইত্যাদি।

এভাবে একদিন সামিরা জোভানকে তার ১০১টি পোট্রেট আঁকতে দেয় এবং তার প্রেমে পড়ে। সামিরা নিজেই তার মাকে জোভানের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে পাঠায়। জোভান প্রস্তাব পেয়ে বলে, রেল দুর্ঘটনায় দুজন নারী মারা যায়। তাদের একজনের পরনে বোরখা, অন্যজনের কপালে সিঁদুর ছিল। তাদের মাঝে ছিল এক বছর বয়সী একটি শিশু এবং সেই শিশুটি আমি।

আপনি কি আমাকে বলতে পারেন কাকে আমি গর্ভধারিণী হিসেবে মেনে নেব? পরে সামিরা পক্ষ থেকে তার মামা জোভানের কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলে তিনি হাতে কার্ড দিয়ে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। ডাক্তারের পক্ষ থেকে জানানো হয়— জোভান ছেলে হলেও তার মেয়েলি হরমোন বিকশিত হচ্ছে এবং এটা প্রাকৃতিকভাবে। যার উপর কেবল সৃষ্টিকর্তারই হাত।

এবার আসুন, এখানে কি জেন্ডার পরিবর্তন করার জন্য উৎসাহ দিয়েছে? কিংবা ছেলে হয়ে মনে মনে মেয়ে কিংবা মেয়ে হয়ে মনে মনে ছেলে ভাবা— এরকম কিছু কি প্রমোট করা হয়েছে? উত্তর দিন। বরং DSD (Disorder Of Sex Development) রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। ফিউচারে চাইলে এটা নিয়ে গবেষণা করা যেতে পারে, যেন চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হয়।

আর আপনি এখনো না বুঝতে পারলে একজন ডাক্তারের সাথে আলাপ করুন, গুগলে সার্চ করুন। হিজড়া কিংবা ডিএসডি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিজে হিজড়া কিংবা ডিএসডি রোগে আক্রান্ত হয় না, প্রাকৃতিকভাবে হয়।

আবার বলি— যারা জেন্ডার পরিবর্তন করে আল্লাহর সৃষ্টির মাঝে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তারা আসলেই বিকৃত মস্তিষ্কের। আর কেউ যদি প্রাকৃতিকভাবে হয়ে যায়, তাহলে তা তাদের সেভাবেই থাকতে দেওয়া উচিত কিংবা চিকিৎসা করানো উচিত।

ছেলে থেকে মেয়ে, মেয়ে থেকে ছেলে— এরকম লিখে গুগল সার্চ করুন, প্রমাণ পাবেন। তারা তো নিজে নিজে জেন্ডার পরিবর্তন করেনি, প্রাকৃতিকভাবে রূপান্তর হয়েছে। আবার অনেকের পরিবর্তন (রূপান্তর) হয় না, তবে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ নেই। শায়খ আহমাদুল্লাহ এদের চিকিৎসার ব্যাপারে জোর দিয়েছেন। চিকিৎসা করলে ঠিক হয়ে যাবে।

এখানে ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ, লেখক, পরিচালক এবং কলাকুশলীদের একটা ভুল আছে। তাদের উচিত ছিল সংবাদ সম্মেলন করা এবং ব্যাপারটা বুঝিয়ে দেওয়া। কিন্তু তা না করে ওয়াল্টন বিবৃতি দেওয়া শুরু করেছে এবং উত্থাপিত অভিযোগ মেনে নিয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক।

এবার বলুন তো, ‘রূপান্তর’ কি আপনারা বয়কট করেছেন? না, বহুলভাবে প্রচার করেছেন। ফিউচারে যদি কোনো ইসলামবিরোধী নাটক/সিনেমা হয়, আমিও সেটার বিরুদ্ধে লিখব। তবে গালিগালাজ করব না। গালি তো মুসলমানদের মুখে শোভা পায় না, আর গালি দিয়ে প্রতিবাদও হয় না। 

উদীয়মান লেখক ও গীতিকার 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence