নার্স দিবসে নেই উৎসব, রয়েছে প্রতিবাদ

নার্সিং শিক্ষার্থীরা
নার্সিং শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

আজ ১২ মে, আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই দিনটি পালিত হয় মানবতার অন্যতম মৌলিক ও নিবেদিত পেশা—নার্সিংকে সম্মান জানাতে। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিনে উদযাপিত এই দিনটি শুধু শ্রদ্ধা জানানোর উপলক্ষ নয়, বরং নার্সদের ভূমিকা, চ্যালেঞ্জ এবং উন্নয়নকে সামনে আনার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তও বটে।চার দফা দাবিতে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিএসসি নার্সিং কলেজে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস বর্জনের কর্মসূচি। দিবসটি ঘিরে কোনও উৎসব নয়, চলছে প্রবিবাদ।

সোমবার ( ১০ এপ্রিল) নার্সিং কলেজের কিছু শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিবেদক কে এসব তথ্য জানান। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ব নার্স দিবস উপলক্ষ্যে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘Our Nurses, Our Future. Caring for nurses strengthens economies’, অর্থাৎ ‘আমাদের নার্সরাই আমাদের ভবিষ্যৎ। নার্সদের যত্ন নেওয়া অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে।’ এই প্রতিপাদ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়, নার্সিং পেশা কেবল মানবিক দায়িত্বেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি দেশের অর্থনীতির সঙ্গেও নিবিড়ভাবে জড়িত।

তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নার্সদের অবদান যেমন বিশাল, তেমনি বড় তাদের স্বীকৃতি ও মর্যাদার ঘাটতি। স্বাস্থ্যসেবায় নার্সরা সামনের কাতারের যোদ্ধা হলেও তাদের কাজের মূল্যায়ন, কর্মপরিবেশ এবং বেতন কাঠামো অনেকাংশেই প্রশ্নবিদ্ধ থেকে গেছে।

বারডেম নার্সিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রশ্ন থেকে যায়—এই নার্সদের আমরা কতটা খোঁজ রাখি? কথিত আছে, চিকিৎসক যদি একটি হাসপাতালের মস্তিষ্ক হয়, তবে নার্সরাই তার হৃদয়। অথচ, আন্তর্জাতিক নার্স দিবস পেরিয়ে গেলে সেই হৃদয়ের খবর আর আমরা রাখি না। আমাদের আবেগী উক্তিগুলো শুধু ১২ মে’র আলোচনা সভাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।

তিনি আরও বলেন, সচেতনতা, নীতিগত সুরক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির ক্ষেত্রে নার্সদের প্রতি আমাদের মনোযোগ আরও গভীর হতে হবে। কেবল দিবস পালন নয়, সারাবছর ধরেই নার্সদের মর্যাদা, সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই এই দিনটির প্রকৃত তাৎপর্য বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

নার্সিং শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ হলো: 

১. এসএসসি পাস করা ডিপ্লোমা নার্সদের নিজস্ব কর্মস্থলে ফিরিয়ে নিয়ে নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মুঞ্জরি কমিশনের  নীতিমালা অনুযায়ী যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করতে হবে। ২. গ্র্যাজুয়েট নার্সদের জন্য স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার পাথ ও অর্গানোগ্রাম তৈরি করে দেশ ও দেশের বাইরে দক্ষ ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। ৩. গ্র্যাজুয়েট নার্সদের জন্য প্রথম শ্রেণির পদ সৃষ্টি ও সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে। ৪. ২০১৬ সালের নার্সিং নিয়োগ বিধি ও জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন করতে হবে।

 


সর্বশেষ সংবাদ