আজ থেকে শুরু হচ্ছে আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৪৯ AM , আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৫৪ PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় আজ থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের রক্ষায় সামনে এগিয়ে এসেছিলেন আবু সাঈদ। কিন্তু সেই মুহূর্তেই পুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেনের রাইফেলের গুলিতে তিনি নিহত হন। সহযোদ্ধাদের কাঁধে ভর দিয়েই হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ সাক্ষ্যগ্রহণের দিন নির্ধারণ করেন। মামলার ৩০ আসামির মধ্যে ৬ জন কারাগারে, বাকি ২৪ জন পলাতক রয়েছেন। কারাগারে থাকা আসামিদের মধ্যে রয়েছেন এএসআই আমির হোসেন, বেরোবির সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়সহ আরও কয়েকজন। পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদ।
প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্যে জানানো হয়, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শাহবাগ থেকে শুরু হওয়া ছাত্রদের লংমার্চ রংপুরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও চলতে থাকে। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে এবং লাঠিচার্জ চালায়। এ সময় আবু সাঈদকে লক্ষ্য করে একাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। আহত অবস্থায় সঙ্গীরা তাকে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করলে আবারও হামলা চালানো হয়।
এ মামলায় প্রমাণ হিসেবে ট্রাইব্যুনালে দুটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। ছেলের ওপর পুলিশের গুলি চালানোর দৃশ্য দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন। আজ তিনিই প্রথম সাক্ষ্য দেবেন বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
আরও পড়ুন: ৩ দফা দাবিতে আগারগাঁও ‘ব্লকেড’ কর্মসূচির ঘোষণা শেকৃবি শিক্ষার্থীদের
প্রধান প্রসিকিউটর বলেন, এই বিচার শুধু একটি মামলার রায় নয়, এটি বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থার প্রতীক। অপরাধী যত প্রভাবশালীই হোক, আইনের কাছে কেউ দায়মুক্তি পাবে না। পলাতক আসামিদের অনুপস্থিতিতেও বিচার চলবে—এটাই প্রমাণ করে যে ন্যায়বিচারের হাত দীর্ঘ এবং অপরাধীরা কোথাও নিরাপদ নয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই এই মামলার মাধ্যমে জনগণ বুঝুক—ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছপা হয় না। এই বিচার হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বার্তা—অপরাধ করলে তার জবাবদিহি করতেই হবে।’