প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শাটডাউন কর্মসূচিতে চুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
- চুয়েট প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৭:০৬ PM , আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫৪ PM
দেশব্যাপী চলমান প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেন আন্দোলনের নীতিনির্ধারকরা। এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করেছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
আজ সকাল থেকেই চুয়েট ক্যাম্পাসের একাডেমিক কার্যক্রমে নেই শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। ফাঁকা পড়ে আছে ক্লাসরুম ও ল্যাবগুলো। ঘোষণা করা হয়েছে পরীক্ষা বর্জনের। পাঁচ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা এই কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হলে থাকা শিক্ষার্থীরাই শুধু ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।
চুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহ তালবি বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই আমরা দেখতে পাচ্ছি যৌক্তিক প্রকৌশল অধিকার আন্দোলন চলছে, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগামী কর্মকাণ্ড লক্ষ করা যাচ্ছে না। ফলে কালকে ঢাকাতে লং মার্চ এর ডাক দেওয়া হয়, যেখানে আমরা দেখতে পাই, সরকার আমাদের আর আমাদের ভাইদের রক্তের ম্যান্ডেটে ক্ষমতা পেয়েছে। সে সরকারের নির্দেশে তার পোষ্য পুলিশ বাহিনী আমাদের ভাইদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আর লাঠিচার্জ করে, আহত করে এবং রক্তাক্ত করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ৫ দফা আসে এবং আমাদের ভাইয়ের ওপর করা হামলার জবাব ইন্টেরিম না দেওয়া পর্যন্ত এবং ৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত লকডাউন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। দেশের সব থেকে মেধাবী শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়ন সরকারের দায়িত্ব। আশা করব সরকার দ্রুত এসব দাবি বাস্তবায়নে সচেষ্ট থাকবে।’
আরও পড়ুন: লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারল কি ছাত্রসংগঠনগুলো?
যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী গোবিন্দ মোদক বলেন, ‘কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি নিয়ে আমি মনে করি, এই আন্দোলন কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, বরং ভবিষ্যতের পেশাগত ন্যায্য মর্যাদা ও জাতীয় উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। আমরা জোরালোভাবে দাবি জানাই অতি দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমাধান নিশ্চিত করা হোক। এতে যেমন আমাদের শিক্ষাজীবন স্বাভাবিক হবে, তেমনি দেশের উন্নয়নও গতিশীল থাকবে।’
চুয়েটের ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মুক্তার হোসাইন এ কর্মসূচি সম্পর্কে বলেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা সব সময় পাশেই আছি। গতকালকেও শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদ আমরা প্রশাসন থেকে জানিয়েছি। আশা করব সরকার শিগগিরই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে এ উদ্ভূত সমস্যার একটি যৌক্তিক সমাধান করবে।’
এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখারপ পর চট্টগ্রামে আন্দোলন শেষ করেন প্রকৌশলের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সয়ম তারা ঢাকায় হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমসহ তিন উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া, ডিসি মাসুদ আলমের পদত্যাগের দাবি জানায়। এ ছাড়া অন্তর্বতী সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার দায়ে সরকারের গায়েবানা জানাজাও পড়েন শিক্ষার্থীরা। কেন্দ্রীয়ভাবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত মােতাবেক আন্দোলন চলবে বলেও জানান তারা।