এইচআইভি পজিটিভ রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেবে রামেক হাসপাতাল

এআরটি সেন্টার উদ্বোধন করেন রামেক হাসপাতাল পরিচালক
এআরটি সেন্টার উদ্বোধন করেন রামেক হাসপাতাল পরিচালক  © সংগৃহীত ছবি

যৌনবাহিত রোগ এইডসের চিকিৎসায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি) সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। সেন্টারে এইচআইভি পজিটিভ রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান করা হবে।

সম্প্রতি রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ সেন্টারটি উদ্বোধন করেন। গণপূর্ত-২ বিভাগ এ সেন্টার বাস্তবায়ন করেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সেন্টারটিতে এইচআইভি পজিটিভ রোগীদের বিনামূল্যে পরীক্ষা ও চিকিৎসা প্রদান করা হবে। সেন্টারের ফোকাল পার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এইচআইভি টেস্টিং অ্যান্ড কাউন্সিলিং (এইচটিসি) সেন্টারের ফোকাল পার্সন ডা. ইবরাহীম মো. শরফ।

তারা জানিয়েছেন, অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি হল এইচআইভি ভাইরাসের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবহৃত ওষুধভিত্তিক দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা। নিয়মিত এআরটি গ্রহণে ভাইরাসের পরিমাণ কমে যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী থাকে এবং রোগী স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন।

উল্লেখ্য, রাজশাহীতে চলতি বছরের ১০ মাসে নতুন ২৮ জনের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সম্প্রতি রাজশাহীতে সমকামী সম্পর্কের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। একই সময়ে এইডসে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।

রামেকের এইচটিসি সেন্টার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৬৪ নমুনা পরীক্ষায় এইচআইভি পজিটিভ হয়েছে ৯৩ জন। এর মধ্যে ২৫ জন পুরুষ, ২ জন নারী ও ১ জন তৃতীয় লিঙ্গের। একই সময়ে এইচআইভিতে মারা গেছেন আটজন। আক্রান্তদের অধিকাংশের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছর। এখানে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১৫ জন পরীক্ষা করাতে আসেন। যাদের পজিটিভ রিপোর্ট আসে তাদের কাউন্সেলিং করা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগে ২০১৯ সালে রামেক হাসপাতালে এইচআইভি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম বছর ৭৭ জনের নমুনায় কারো দেহে ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। ২০২০ সালে দুইজন পজিটিভ হন। এরপর ২০২১ সালে ৮ জন, ২০২২ সালে ৮ জন, ২০২৩ সালে ২৪ জন, ২০২৪ সালে ২৭ জন ও ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ২৮ জনের শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালে আক্রান্ত ২৭ জনের ১৬ জনই সমকামীতার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। এরমধ্যে যৌনকর্মীর মাধ্যমে ১০ এবং রক্তের মাধ্যমে একজন সংক্রমিত হয়েছেন। চলতি বছর অক্টোবর পর্যন্ত শনাক্ত ২৮ জনের ১৭ জন সমকামী সম্পর্কের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়া যৌনকর্মীর মাধ্যমে ১০ ও রক্তের মাধ্যমে একজন সংক্রমিত হয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ