ম্যালেরিয়া ঠেকাতে ‘জাদুকরী’ ট্যাবলেট: মানুষ বাঁচে, মশা মরে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫১ PM , আপডেট: ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১১ PM
ম্যালেরিয়ার কারণে বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর প্রায় ৬ লাখের বেশি মানুষ মারা যান। ফলে ম্যালেরিয়া নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণা চলতেই থাকে। মশার কামড়ে ছড়ানো প্রাণঘাতী রোগ ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবার যুক্ত হয়েছে নতুন একটি অস্ত্র—একটি ট্যাবলেট, যা মানুষকে সুরক্ষিত রাখার পাশাপাশি মশাকেও মেরে ফেলে। (খবর এসটিডি)
সম্প্রতি কেনিয়া ও মোজাম্বিকে পরিচালিত এক বিশাল গবেষণায় দেখা গেছে, ‘আইভারমেকটিন’ নামক একটি অ্যান্টিপ্যারাসিটিক ওষুধের ব্যাপক ব্যবহার ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ২৬ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে সক্ষম। গবেষকরা বলছেন, এই ওষুধ গ্রহণের পর মানুষের রক্ত মশার জন্য বিষে পরিণত হয়—ফলে কামড়ানোর পরই মশাগুলো মারা যায়।
গবেষণাটি পরিচালনা করেছে বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ (ISGlobal)। এতে সহায়তা করেছে ‘লা কাইক্সা’ ফাউন্ডেশন, মানহিসা হেলথ রিসার্চ সেন্টার (CISM) এবং কেমরি-ওয়েলকাম ট্রাস্ট রিসার্চ প্রোগ্রাম।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে হাসপাতালে ভর্তি ৩৯৪, মৃত্যু কত?
গবেষকরা জানান, আইভারমেকটিন শুধুই ম্যালেরিয়া নয়, বরং উকুন, খোসপাঁচড়া এবং খাটপোকার মতো অন্যান্য জীবাণুবাহিত সমস্যাও কমিয়ে আনে। মাসে মাত্র একটি ডোজ গ্রহণেই এসব সমস্যার সমাধান মিলেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রায় ২৬৩ মিলিয়ন মানুষ, আর মৃত্যু হয় ৫ লাখ ৯৭ হাজার জনের। দীর্ঘস্থায়ী মশারি (LLIN) ও ঘরোয়া স্প্রে (IRS)-র মতো প্রচলিত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলোর কার্যকারিতা দিন দিন কমে আসছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ—মশার ইনসেক্টিসাইড প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং দিনের এমন সময় বা স্থানে কামড়ানো, যখন মানুষ এসব সুরক্ষা ব্যবস্থার আওতায় থাকে না।
এই পরিস্থিতিতে আইভারমেকটিন একটি অতিরিক্ত সুরক্ষার স্তর হিসেবে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।
এই ট্রায়ালটি ছিল এ ধরনের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। গবেষণায় এমন এলাকাগুলোতেও ম্যালেরিয়া সংক্রমণ কমে যাওয়ার প্রমাণ মিলেছে, যেখানে এর আগে থেকেই মশারি ও অন্যান্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা চালু ছিল।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে নতুন এ পদ্ধতি স্বল্প ব্যয়ে বড় পরিসরে বাস্তবায়ন করা গেলে জনস্বাস্থ্য খাতে এটি এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে।