এক বছর ধরে নষ্ট থার্মাল স্ক্যানার, বেনাপোলে ঝুঁকিতে করোনা প্রতিরোধ ব্যবস্থা

বেনাপোল স্থলবন্দর
বেনাপোল স্থলবন্দর   © সংগৃহীত

যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানিং মেশিনটি দীর্ঘ এক বছর ধরে অচল পড়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে করোনার নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ার পরও দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলে কার্যকর কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক নির্দেশনা অনুযায়ী, দেশের সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সতর্কতা জোরদারের কথা বলা হলেও বেনাপোল ইমিগ্রেশনে তার কোনো বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন শত শত ভারতীয় ট্রাকচালক ও পাসপোর্টধারী যাত্রী কোনো সুরক্ষা বিধি মানা ছাড়াই অবাধে প্রবেশ করছেন দেশে। অনেকের মুখে নেই মাস্ক, নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার। এমনকি বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকদের মাঝেও স্বাস্থ্যবিধির কোনো প্রয়োগ চোখে পড়ছে না।

এদিকে বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এভাবে সতর্কতা উপেক্ষিত থাকলে অচিরেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আগের মতোই বাণিজ্য কার্যক্রমে ধস নামতে পারে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেনাপোলের মতো স্পর্শকাতর বন্দর এলাকায় অবহেলা চলতে থাকলে শুধু বাণিজ্য নয়, সমগ্র সীমান্ত অঞ্চলের জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়বে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল মজিদ বলেন, ‘ডিজিটাল থার্মাল স্ক্যানারটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট থাকায় আমরা বাধ্য হয়ে হ্যান্ড থার্মাল দিয়ে সন্দেহভাজন যাত্রীদের পরীক্ষা করছি। তবে অনেকে সুরক্ষা নির্দেশনা মানতে চায় না। এখনো ভারত থেকে আসা কারো শরীরে করোনা শনাক্ত হয়নি, তবে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘গতবার সংক্রমণ বাড়লে প্রায় তিন মাস বন্ধ ছিল বাণিজ্য কার্যক্রম। সে সময় আমরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম। এখনই প্রয়োজন কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।’

সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য বিলকিস সুলতানা সাথি বলেন, ‘বন্দরে কোনো স্বাস্থ্য সুরক্ষা না থাকায় আমরা চরম ঝুঁকিতে রয়েছি। এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।’

ভারতের সঙ্গে প্রতিদিন ৫-৬ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আসা-যাওয়া করে বেনাপোল বন্দর দিয়ে। সেই সঙ্গে হাজারো পাসপোর্টধারী যাত্রীর যাতায়াতও হয় এ রুটে। গত ৮ দিনে দেশে করোনায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, এরমধ্যে যশোরেই মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মামুন কবির তরফদার বলেন, ‘বন্দরে সবাইকে মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। খুব শিগগিরই অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।’

 


সর্বশেষ সংবাদ